প্রতি ১০ জাপানির একজনের বয়স ৮০ বছরের বেশি
জাপানের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষের বয়স ৮০ বছরের বেশি। সূর্যোদয়ের দেশ হিসেবে খ্যাত দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমনটা হয়েছে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, আজ রেসপেক্ট ফর এইজ ডে। এই দিবস উপলক্ষে রোববার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে জাপান। এতে দেখা যায়, জাপানের মোট জনসংখ্যার ২৯ দশমিক এক শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। যা আগের বছর অর্থাৎ, ২০২২ সালে ছিল ২৯ শতাংশে।
জাপানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বয়স্ক জনসংখ্যার দিক থেকে জাপানের পরেই রয়েছে ইতালি। দেশটির মোট জনসংখ্যার ২৪ দশমিক পাঁচ শতাংশই বৃদ্ধ। আর ২৩ দশমিক ছয় শতাংশ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক জনসংখ্যা রয়েছে জাপানে।
এএফপি বলছে, সর্বশেষ কয়েক দশক ধরেই জাপানের জনসংখ্যা সংকুচিত হচ্ছে। দেশটিতে বৃদ্ধ বয়সীদের সংখ্যাও ক্রমাগত বাড়ছে। অপরদিকে কমছে জন্মহার। চাকরি ও অর্থনৈতিক সমস্যার অজুহাতে বিয়ে ও সন্তান নিচ্ছে না দেশটির মধ্যবয়স্করা। আর এতেই দেশটিতে বয়স্কদের যত্নের জন্য খরচ বাড়ছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, বেবি বুমারের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল) সময়ে যারা জন্ম নিয়েছিল তাদের বয়স ৭৫ এর বেশি হয়ে গেছে। দেশের ১২ কোটি ৪৪ লাখ মানুষ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধ হচ্ছেন। এক কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার জাপানিজের বয়স ৮০ বছরের বেশি। আর দুই কোটি লোকের বয়স ৭৫ এর বেশি। এতে করে জাপান প্রবীণ শ্রমশক্তির ওপর নির্ভর করছে।
এএফপি জানিয়েছে, বর্তমানে জাপানে ৯০ লাখের বেশি শ্রমিকই প্রবীণ। এর মানে দাঁড়ায় মোট শ্রমিকের ১৩ দশমিক ছয় শতাংশই বৃদ্ধ। অর্থাৎ, প্রতি সাত শ্রমিকের মধ্যে একজন বয়স্ক।
জাপানে যত প্রবীণ লোক রয়েছে তার মধ্যে এক চতুর্থাংশ এখনও চাকরি করে। তবে, এই পরিসংখ্যানে জাপানকে ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির ৩৬ দশমিক দুই শতাংশ বৃদ্ধ চাকরি করে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ১৮ দশমিক ছয় শতাংশ ও ফ্রান্সে তিন দশমিক নয় শতাংশ প্রবীণ চাকরিতে যুক্ত।
সরকারি পরিসংখ্যানের তথ্য মতে, জাপানে ৭০ থেকে ৭৪ বছরের যত বয়স্ক রয়েছে তার মধ্যে এক তৃতীয়াংশের বেশি লোক চাকরি করে।
২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের বয়স্ক জনগণ মোট জনসংখ্যার ৩৪ দশমিক আট শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।