পারমাণবিক অস্ত্রের সামর্থ্যকে সংবিধানের অংশ করল উত্তর কোরিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি মোকাবিলায় আরও আধুনিক পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করতে কিম জং উনের ডাকের মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্রের সামর্থ্যকে সংবিধানের অংশ করে নিয়েছে। দেশটির সরকারি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য দিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এ বছর দেশটি রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। পাশাপাশি দেশটি যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাদের মিত্র দেশগুলোর হুঁশিয়ারিকে অগ্রাহ্য করে।
পিয়ংইয়ংকে পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ কারার প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে আনার লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতার ব্যর্থতার পর এবং কিমের গত বছরের দেওয়া ‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক অস্ত্রের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণার মুখে গত সপ্তাহে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্রের এই সামর্থ্যের বিষটিকে সংবিধানের অংশ করে নিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিএনএ’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কিম জং উন পিপলস অ্যাসেম্বলিতে বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ার বিষয়টিকে রাষ্ট্রের মৌলিক আইন হিসেবে স্থায়ী মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ এর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করতে না পারে।’ গত মঙ্গলবার ও বুধবার পার্লামেন্টের অধিবেশন বসে।
কিম আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকি মোকাবিলা করতে উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্রে সুসজ্জিত করা দরকার।
কিম জং উন বলেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ বিষয়ে যৌথ মহড়ার জন্য এবং কোরীয় উপদ্বীপে স্থায়ীভাবে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিকে তীব্র মাত্রা দিয়েছে।’ তিনি ওয়াশিংটন, সিউল ও টোকিও’র সাম্প্রতিক নিরাপত্তা সহযোগিতাকে সত্যিকারের সবচেয়ে খারাপ হুমকি হিসেবেও বর্ণনা করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক সামর্থ্যের বিষয়টিকে সংবিধানের অংশ করে নেওয়ার ফলে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বেকে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা থেকে বের করে আনার লক্ষ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরির আশা আরও ক্ষীণ হয়ে এলো।
এ বছর উত্তর কোরিয়া বেশ কিছু আন্তমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাসহ তাদের সামরিক বাহিনীর ভাষায় ‘কৌশলগত পারমাণবিক হামলা’র মহড়ায় অংশ নেয়। এছাড়া পিয়ংইয়ং এ বছর দুবার মহাশূন্যে গোয়েন্দা সামরিক কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
দেশটির এতসব তৎপরতার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করে। এর আওতায় আয়োজন করা হয় ব্যাপক মাত্রার সামরিক মহড়া এবং জাপানকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক নৌ মহড়াও পরিচালিত হয়।