রণক্ষেত্র গাজা ও ইসরায়েল, একদিনেই ঝরল তিন শতাধিক প্রাণ

Looks like you've blocked notifications!
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হামাস। ছবি : এএফপি

হামলা পাল্টা হামলার জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে অধিকৃত পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও ইসরায়েল। এর শুরুটা হয়েছিল ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলার মাধ্যমে। শনিবার সকালে (৭ অক্টোবর) সকালের দিকে ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। পাশাপাশি একটি ইসরায়েলি বসতিতে ঢুকে পড়ে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। আর এতেই প্রাণ হারান অনেকে। আর হামাসের অনবরত রকেট হামলার জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি শহর।

হামাসের আকস্মিক হামলায় হতভম্ব হয়ে পড়ে ইসরায়েল। পাল্টা আক্রমণও শুরু করে তারা। গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে একের পর এক বিমান হামলা চালায় তারা। এতে রক্তাক্ত হয় গাজা ও পশ্চিম তীর।

গাজায় ইসরায়েলের হামলার জেরে নিহত হয়েছে ১৯৮ ফিলিস্তিনি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। আর আহত হয়েছে অন্তত এক হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। আর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১০০’র মতো ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির উদ্ধারকারী সংস্থাও। তাদের মতে, গুরুতর আহত হয়েছে কয়েকশ ইসরায়েলি। আর বেশ কয়েকজন ইসরায়েলিসহ কয়েকজন সৈন্যকে আটকের দাবি করেছে হামাস। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

দুপক্ষের লড়াইয়ে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে যা অনুমেয়।

এদিকে, স্বাধীনতার জন্যই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটির উপপ্রধান সালেহ আল-আরুরি বলেন, ‘স্বাধীনতার জন্যই আমাদের এই লড়াই।’ আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি কোনো অভিযান নয়। আমরা সর্বাত্মক একটি লড়াই শুরু করেছি। আমাদের ধারণা, এই লড়াই চলবে ও তা বিস্তৃত হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, আমাদের স্বাধীনতা ও পবিত্র স্থাপনাগুলোর মুক্তি।’

এই হামাস নেতা বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বাজে অবস্থা দেখতেও রাজি আছি। যেকোনো পরিস্থিতি এখন সম্ভব। আমরা ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত। আমরা অনেক ইসরায়েলি যোদ্ধাকে হত্যা ও আটক করেছি। লড়াই এখনও চলমান। ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের আমি বলতে চাই, আপনাদের স্বাধীনতা ফিরে আসবে। কারণ, বিনিময়ের জন্য আমাদের কাছে যথেষ্ট ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে। লড়াই যত দীর্ঘস্থায়ী হবে ততই বন্দির সংখ্যা বাড়তে থাকবে।’ 

এদিকে, ইসরায়েলে হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোসহ আরও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। আর সংঘর্ষের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরান, কাতার ও কুয়েত। অবিলম্বে  গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকটের জেরে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আগামীকালই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

এই সংঘর্ষ ও হতাহতের জন্য দখল ইস্যুকে দোষ দিচ্ছেন ইসরায়েলের এক রাজনৈতিক। হাদাশ পার্টির সদস্য ও নেসেটের সদস্য ওফার কাসিফ বলেন, ‘উভয় পক্ষের বেসামরিক লোকদের হত্যা নিন্দনীয় ছিল। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকাণ্ড।

গাজার ছিটমহলগুলোতে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের জ্বালানি মন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমি গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না করেছি। এ সংক্রান্ত একটি আদেশে আমি স্বাক্ষর করেছি।’