আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত শতাধিক

Looks like you've blocked notifications!
আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের জেন্ডা জেলায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়িতে অধিবাসীরা। ছবি : এএফপি

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শক্তিশালী আফটার শকের ঘটনায় শতাধিক লোক নিহত হয়েছে। হতাহতদের সন্ধান ও উদ্ধারে অভিযান চলছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। খবর আলজাজিরার।

শনিবার (৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী বাদঘিস ও ফারাহ প্রদেশেও শক্তিশালী আফটার শক অনুভূত হয়। 

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানায়, ভূমিকম্পে ১০০ জানের বেশি মারা গেছে এবং আহত হয়েছে ৫০০ জনের বেশি।

তবে, আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কেন্দ্র (ওসিএইচএ) অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ৩২০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। 

ওসিএইচএ’র এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের অংশীদার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কেননা এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। আমাদের কাছে খবর আসছে, অনেক লোক ধসে যাওয়া বাসা-বাড়ির নিচে আটকা পড়েছেন।’

হেরাত শহরের একজন অধিবাসী আব্দুল শাকুর সামাদি জানান, শনিবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পটি প্রথম আঘাত হানার পর দুপুর নাগাদ পাঁচটি শক্তিশালী আফটার শক হয়। তিনি বলেন, ‘সব মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে। বাড়িঘর, অফিস-আদালত, দোকানপাট সব মানুষশূন্য হয়ে পড়ে। সবাই আরও ভূমিকম্পের ভয় করছিলেন। আমি ও আমার পরিবার ঘরেই ছিলাম। আমরা প্রচণ্ড ভূমিকম্প অনুভব করি। একসময় ভয়ে সবাই বাইরে বের হয়ে আসি।’

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। সংস্থাটি আরও জানায়, ভূমিকম্পটি প্রথম আঘাত হানার পর ৬ দশমিক ৩, ৫ দশমিক ৯ ও ৫ দশমিক ৫ মাত্রার আরও তিনটি আফটার শক অনুভূত হয়। তাছাড়া আরও বেশ কয়েকবার অপেক্ষাকৃত কম মাত্রায় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে।

এদিকে আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জান জানান, হেরাত প্রদেশের জেন্ডা জেলার চারটি গ্রামের বাড়িঘর ভূমিকম্প ও আফটার শকের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ফারাহ ও বাদঘিস প্রদেশ থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনতে ১২টি অ্যাম্বুলেন্স কাজে লাগানো হয়েছে। আহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

আফগানিস্তানের তালেবান নিযুক্ত অর্থনীতিবিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল ঘানি বারাদার হেরাত ও বাদঘিসে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তালেবান প্রশাসন স্থানীয় সাহায্য সংস্থাগুলোকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।