গাজার আশ্রয় শিবির নিরাপদ নয় : জাতিসংঘ
ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। অঞ্চলটিতে থাকা আশ্রয় শিবিরগুলোকে আর নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের রিলিফ এন্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ)। এমন পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন বলছে সংস্থাটি। খবর আল-জাজিরার।
এক বিবৃতিতে ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, যুদ্ধের কিছু নিয়ম আছে। বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল, স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও জাতিসংঘের কার্যালয় লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না। আমরা ইউএনআরডব্লিউএয়ের আশ্রয়কেন্দ্র ও আশ্রয়প্রার্থীসহ বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা পূরণে পক্ষগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে, গাজায় ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থাটির মুখপাত্র ম্যারগারেট হারিস আল-জাজিরাকে বলেন, ‘হাসপাতালগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ। মানুষেরা চিকিৎসা পাচ্ছে না। দগ্ধ শিশুদের ব্যথা উপশমের ওষুধ নেই। পরিস্থিতি একেবারেই জটিল।’
গত বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানম মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল-ফাতেহ ইল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মিসরের প্রেসিডেন্টকে গাজার জন্য একটি করিডোর খোলার আহ্বান জানান ডব্লিউএইচও প্রধান। এতে সম্মত হয়েছে মিসর। এ বিষয়ে হারিস বলেন, ‘সহায়তা পাঠানোর জন্য এক পক্ষ রাজি হলেই চলবে না। অন্যপক্ষ অর্থাৎ, ইসরায়েলকেও বিষয়টি মানতে হবে।’
অন্যদিকে, গাজা শহরে অবস্থিত আল-কুদস হাসপাতাল থেকে রেড ক্রসের সদস্যদের চলে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে প্যালেস্টিনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার ৪টার মধ্যে (গ্রিনিচ মান অনুযায়ী সময় ১৩.০০) তাদের হাসপাতাল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, পরে অবশ্য সময় বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা করা হয়।
আল-জাজিরার তথ্যমতে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত দুই হাজার ২১৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছে প্রায় ৯ হাজার। আর ইসরায়েলে মারা গেছে এক হাজার ৩০০ জন। সেখানে আহতের পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ৬৪ হাজার ২৮৩টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৫৪০টি ভবন পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ১৮টি উপাসনালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১১টি মসজিদ রয়েছে। ২০টি অ্যাম্বুলেন্স ও ১০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রও ধ্বংস হয়ে গেছে।