সৌদির আল জউফ প্রদেশের গভর্নরের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাংলাদেশি অভিবাসীদের কর্মদক্ষতা ও সততার প্রশংসা করেছেন সৌদি আরবের আল জউফ প্রদেশের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন নাওয়াফ বিন আবদুল আজিজ আল সউদ। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) আল জউফের গভর্নরের সঙ্গে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর বৈঠককালে গভর্নর বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিষয়ে এই প্রশংসা করেন।
আল জউফ প্রদেশের গভর্নর জউফ প্রদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের তাঁর ভাই উল্লেখ করে তাদের সাহায্য সহযোগিতা করা নৈতক দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের মধ্যে খুবই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গভর্নর দুই দেশের সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আগামী দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত গভর্নরকে জানান, আল জউফ প্রদেশের বিভিন্ন শহরে অনেক বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছে।
গভর্নর জানান, এ প্রদেশে প্রচুর পরিমাণ জলপাই উৎপাদন ছাড়াও বিভিন্ন শস্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। তিনি সৌদি আরবের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেন। জউফ প্রদেশে কৃষি খামারে অনেক বাংলাদেশি কৃষি পণ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে বলে তাঁদের প্রশংসা করেন।
গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন নাওয়াফ বলেন, জওফ প্রদেশে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। সৌদি সরকারের ক্লিন এনার্জি উৎপাদন লক্ষ্যের অংশ হিসেবে প্রায় ১০০০ উইন্ড টারবাইন দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা ৪৭ হাজার বাড়িতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবের আকওয়া পাওয়ার বাংলাদেশে সোলার এনার্জি নিয়ে কাজ করছে। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন স্থানের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময়ের কথাও উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত এ সময় গভর্নরকে জানান, আল জউফ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করছে। এই সংবাদে গভর্নর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং তিনি আশা করেন আগামী দিনে আল জউফ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসবে।
গতকাল দুপুরে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আল জউফের চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ড. হামদান বিন আবদুল্লাহ আল সামরিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক ও কৃষি পণ্যের সৌদি আরবে চাহিদা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
চেম্বার সভাপতি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আল জউফ প্রদেশে ফার্মিং ও ফুড প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জর্দানের অনেক ব্যবসায়ী আল জউফে ফুড প্রসেসিং ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। চাইলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত সৌদি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। পরে রাষ্ট্রদূত একটি জলপাই তেল উৎপাদন ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখেন। তিনি আল জউফের ঐতিহাসিক স্থান দুমাতুল জান্দালও পরিদর্শন করেন। এ সময় দূতাবাসের কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।