ভেস্তে গেছে যুদ্ধবিরতি, বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুমিছিল

Looks like you've blocked notifications!
গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরে ইসরায়েলের হামলায় বিস্ফোরণের দৃশ্য। ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে তোলা ছবিটি গতকাল শনিবার রাতের। ছবি : এএফপি

ভেস্তে যাওয়া যুদ্ধবিরতি আবারও কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক আহ্বানকে উপেক্ষা করে গাজায় হামাসের অবস্থানে ইসরায়েলের বিমান হামলা চলছেই। পাশাপাশি ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হামাসের যোদ্ধারা।

এদিকে, শুক্রবার পর্যন্ত সংঘাতের সাময়িক বিরতির পর নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তর অংশ জুড়ে এখনও আকাশে থেমে থেমে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি। হামাসের হিসাবে সাম্প্রতিক এই হামলায় ২৪০ জন লোক নিহত হয়েছে। খবর এএফপির।

অপরদিকে, ইসরায়েলের সামরিক কমান্ড জানিয়েছে দেশটির দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে  ৪০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্ক সংকেত বেজে ওঠেছে। ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ও ইসলামি জিহাদ রাজধানী তেল আবিবসহ বেশ কয়েকটি শহরে উপুর্যপুরি রকেট হামলার ঘোষণা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লে. কর্নেল পিটার লারনার বলেন, ‘গত শুক্রবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলে হামাস আড়াইশ’র বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে।’

অন্যদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে, আট সপ্তাহ ধরে চলা এই যুদ্ধে গাজার ১৭ লাখেরও বেশি অধিবাসী বাড়িঘর হারিয়েছেন। এই সংখ্যা উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ।

গাজা শহরের আল আহলি হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক ফাদেল নাইম জানিয়েছেন, হাসপাতালের মর্গে গতকাল শনিবার সাত শিশুসহ ৩০টি মৃতদেহ রাখা হয়েছে।

নেমর আল-বেল নামে গাজার একজন অধিবাসী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বিমানগুলো আমাদের বাড়িতে বোমাবর্ষণ করছে, তিনটি বোমা ফেলে আমাদের তিনটি বাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, হামলায় তার পরিবারের ১০ জন লোক মারা গেছে আর ১৩ জন ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়েছে।

শনিবার সাহায্যপণ্য নিয়ে কয়েকটি ট্রা্ক পৌঁছালেও গাজাবাসী এখনও খাবার, পানি ও অন্যান্য অত্যাবশ্যক দ্রব্যের তীব্র সঙ্কটে রয়েছে। এই পরিস্থিতিকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা মানবিক বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছে।

গাজায় আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের অপারেশন হেড পাসচাল হান্দট বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক বাড়িঘর, হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান যে অবস্থা তাতে অর্থবোধক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানো প্রায় অসম্ভব। আমার ভয় হচ্ছে যে, এতে বেসামরিক লোকজনের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে।’

এদিকে, ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, শুক্রবার হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলোকে মিসর সংলগ্ন রাফা সীমান্তে সাহায্য পণ্যবাহী বহর যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে শনিবার কিছু ট্রাক এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গাজায় প্রবেশ করে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে এবং ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এর পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলায় গাজা উপত্যকায় ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়।