দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হচ্ছেন জাপানের চার মন্ত্রী
দলীয় আর্থিক বিষয়ে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির দায়ে চারজন মন্ত্রীকে আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বরখাস্তের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
বরখাস্ত হতে যাওয়া মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ফুমিও কিশিদার ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো এবং অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াসুতোসি নিশিমুরা। এই তালিকায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুনজি সুজুকি ও কৃষিমন্ত্রী ইচিরো মায়াশিতা। এ ছাড়া তালিকায় আছেন আরও পাঁচজন উপমন্ত্রী। নাম উল্লেখ না করে বিভিন্ন সরকারি ও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা জাপানের বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন বলে আশা করা হচ্ছে। যাদের বরখাস্ত করা হচ্ছে, তারা গত চার দশক ধরে দেশটির ক্ষমতায় থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সদস্য।
প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইয়েন (৩৪ লাখ ডলার) আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আততায়ীর হাতে নিহত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন উপদলটির নেতাদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বিস্তারিত কোনো কিছু না জানিয়ে বলেন, ‘জনগণের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
সংবাদকর্মীদের মাতসুনো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দলীয় তহবিল গঠনে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের ভাবমূর্তি দ্যোদুলমান। আর এ কারণেই তিনি জনগণের আস্থা ফেরাতে প্রয়োজনীয় ও সঠিক ব্যবস্থা নেবেন।’
দলের তহবিল সংগ্রহে যেসব নেতা তাদের দেওয়া কোটা অতিক্রম করে অর্থ সংগ্রহ করেছেন তাদের বিরুদ্ধেই মূলত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এলডিপির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি যদি আপনার কোটার বেশি টিকিট বিক্রি করেন, তবে বাড়তি অর্থটা আপনার ব্যক্তিগত।’
এদিকে জাপানের পার্লামেন্টের বিরোধীদল এই ইস্যুকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এই প্রস্তাব সফল হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, পার্লামেন্টে সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিশিদাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রতি সহযোগিতা বজায় রেখে আমি আমার বিশ্বাস থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ২০২৫ সাল নাগাদ ক্ষমতায় থাকার জন্য মনোনীত হলেও অনেকে মনে করছেন আগামী বছর অনুষ্ঠেয় এলডিপির অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব নির্ধারণের নির্বাচনের আগে তিনি আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন ঘোষণা করতে পারেন।