হিন্দিতে গান করে মোদির নজরে জার্মানির অন্ধ কণ্ঠশিল্পী ক্যাসমে

Looks like you've blocked notifications!
জার্মানির কণ্ঠশিল্পী ক্যাসান্দ্রা মে স্পিটমান। ছবি : ডয়চে ভেলে

জার্মানির কণ্ঠশিল্পী ক্যাসান্দ্রা মে স্পিটমান চোখে দেখেন না৷ ভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতির প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নজর কেড়েছে৷ কখনও ভারতে না যাওয়া ক্যাসমে কয়েকটি ভাষায় গান গাইতে পারেন৷

ক্যাসমে নামে অধিক পরিচিত এই শিল্পী বলেন, ‘ভারতীয় সংগীতের সঙ্গে আমার পরিচয় যুক্তরাষ্ট্রে৷ ২০১৭ সালে আমি বার্কলে কলেজ ও মিউজিকে ছিলাম৷ সেখানে ভারতের একটি গানের দল ছিল, যাদের কাছ থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি৷ দেশে ফিরে আমি হিন্দি শেখা শুরু করি, হিন্দি গান শেখা শুরু করি৷ কিছুদিন পর ইনস্টাগ্রামে ভারতের বিভিন্ন ভাষার গান পোস্ট করা শুরু করি।’

গত সেপ্টেম্বরে নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতির প্রতি ক্যাসমের ভালোবাসা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার পর তার গানগুলো ভারতে ভাইরাল হয়েছিল৷ ক্যাসমে কখনও ভাবেননি যে প্রধানমন্ত্রীর নজরে পড়তে পারেন তিনি৷

ক্যাসমে বলেন, ‘মোদি তার পডকাস্টে আমার নাম উল্লেখ করায় খুব অবাক হয়েছি৷ আমি কখনও ভাবিনি এটা সম্ভব হতে পারে৷ আমার কাছে শকিং মনে হয়েছে, কিন্তু ইতিবাচক উপায়ে৷’

ছোটবেলা থেকে গান আর বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখছেন ক্যাসমে৷ জন্ম থেকেই তিনি অন্ধ, কিন্তু এটা তার শিল্পী হয়ে ওঠার স্বপ্নে বাধা হতে পারেনি৷ জার্মানির অনেক গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন ক্যাসমে৷ মঞ্চে গান গেয়েছেন৷ গত কয়েক বছরে ভারতের সংগীত ও সংস্কৃতির প্রতি তার আগ্রহ বেড়েছে৷ যদিও কখনও ভারতে যাননি তিনি৷

মোদি তার পডকাস্টে ক্যাসমের কথা উল্লেখ করার পর ইনস্টাগ্রামে তার অনুসারীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে৷ তার ধারণা, অনুসারীদের ৯০ শতাংশের বেশি ভারতের৷ ভারতের ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবের দিনগুলোতে তিনি ইনস্টাগ্রামে ভারতের বিভিন্ন ভাষার গান প্রকাশ করেন৷

ক্যাসমে বলেন, ‘অন্ধ হিসেবে ইনস্টাগ্রামে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা আসলে আরও সহজ, যেটা আমার ভালো লাগে৷ তবে ভিডিও ও অডিও সম্পাদনা করে পোস্ট করার সময় অন্যের সহায়তা লাগে৷ আমার অবশ্যই সহায়তা লাগে, কিন্তু আসলে সত্যি বলতে, অন্ধ হিসেবে আমি নিজেই ভিডিও ও ছবি পোস্ট করতে পারি৷ মন্তব্যের উত্তর ও সরাসরি বার্তাও পাঠাতে পারি৷’

ভারতীয় উপমহাদেশের বাদ্যযন্ত্র তবলা ও ঢোলের শব্দ পছন্দ করেন ক্যাসমে৷ কোলনের ভারতীয় সংগীত স্কুলে তিনি এগুলো বাজানো শিখছেন৷ ক্যাসমে বলেন, ‘ভারতীয় সংগীত সম্পর্কে জানার পর আমি অনেকগুলো ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল কনসার্টে গিয়েছি৷ সেখানে একজন তবলাবাদক ছিলেন৷ দারুণ বাজাচ্ছিলেন তিনি৷ তবলার বিভিন্ন শব্দ শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম৷ তবলার সবকিছু আমার ভালো লেগে গিয়েছিল৷ তাই আমি এটা বাজানো শিখতে চেয়েছি৷ সিদ্ধান্তটা ভালো ছিল৷ তারপর সেই তবলাবাদক আমার শিক্ষক হয়ে যান৷’

অনুসারীদের সঙ্গে দেখা করতে শিগগিরই ভারতে যাওয়ার আশা করছেন ক্যাসমে৷ তাদের কারণেই আরও ভারতীয় গান গাওয়ার অনুপ্রেরণা পান তিনি৷ অন্ধদেরও তাদের স্বপ্নের পেছনে ছুটতে অনুপ্রেরণা জোগাতে চান ক্যাসমে৷ যেমনটা তিনি ভারতীয় সংগীত নিয়ে করেছেন৷