মানবপাচারের অভিযোগে ফ্রান্সের বিমানবন্দরে আটক ৩০০ ভারতীয়

Looks like you've blocked notifications!
ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দরের টার্মিনালের বাইরে টহল দিচ্ছে পুলিশ। ছবি : এএফপি

মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করা একটি ফ্লাইটের প্রায় ৩০০ ভারতীয় নাগরিককে ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দরে আটকে রেখেছে দেশটির পুলিশ। মানবপাচারের শিকার হয়েছেন এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকে আটক রাখা হয়। 

স্থানীয় সুরক্ষা এজেন্সির দেওয়া তথ্য অনুসারে, ওই ফ্লাইটে ২১ মাসের শিশুসহ বেশকিছু অভিভাবকহীন শিশু যাত্রীও রয়েছে। খবর এপির।

প্যারিস প্রসিকিউটর অফিস সূত্রে জানা গেছে, মানবপাচারে জড়িত থাকার সন্দেহে দুজন যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। তবে কোনো ধরনের পাচারের ঘটনা কিংবা ওই যাত্রীদের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ছিল কি না, এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি প্রসিকিউটরের অফিস থেকে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্যাপক ঢল লক্ষ্য করা গেছে।

ফ্রান্সের স্যাম্পেন কাউন্ট্রির ছোট ভাত্রি বিমানবন্দরের জানালাগুলো যাত্রীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এ-৩৪০ ফ্লাইটের ওই প্লেনটিকে উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিমানবন্দরের টার্মিনালে অবস্থান করছে প্লেনটি। এ বিমানবন্দর থেকে অন্যান্য ফ্লাইটগুলো বাতিল করা হয়েছে এবং অবতরণে করতে আসা বেশকিছু ফ্লাইটের গতিপথ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ থেকে ছেড়ে আসা নিকারাগুয়ার রাজধানী মানাগুয়ার উদ্দেশে যাত্রা করা লিজেন্ড এয়ারলাইন্সের ওই চার্টার্ড ফ্লাইটের ১৫ জন ক্রুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটিতে তেল নেওয়ার জন্য থামে ফ্লাইটটি। তবে, আবার আকাশে উড়ার আগে হঠাৎ ফরাসি পুলিশ মানবপাচারের অভিযোগ তদন্তের জন্য বিমানবন্দরটি ঘিরে ফেলে। ভাত্রি বিমানবন্দরটি থেকে বেশিরভাগ সময়ে চার্টার্ড ও কার্গো ফ্লাইট পরিচালিত হয়ে থাকে।

এরপর প্লেনটি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে আলাদা করে রাখা হয় এবং দুই রাত তাদের অস্থায়ী শয্যায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়। 

মার্নের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথমে যাত্রীরা বিমানেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিমানটি ঘিরে রাখে পুলিশ। অবশ্য পরে যাত্রীদের সবাইকে বিমানবন্দরের প্রধান হলরুমে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে রয়েছে জরুরি বিভাগের কর্মী, ডাক্তার ও স্বেচ্ছাসেবীরা। যাত্রীদের খাবারসহ জরুরি চিকিৎসা সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, এ ঘটনার পর থেকেই ভারতীয় কনসুলার প্রতিনিধি বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন। সমস্যার দ্রুত সমাধানে ফরাসি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন তিনি। ফ্রান্সের ভারতীয় দূতাবাস এক্স পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।

লিজেন্ড এয়ারলাইন্সের আইনজীবী লিলিয়ানা বাকাইয়োকে জানান, তার কোম্পানি কোনো আইন লঙ্ঘন করেনি। মানবপাচারে এয়ারলাইন্সটির কোনো ভূমিকা নেই বলেও জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার মানবপাচারের বিরুদ্ধে ন্যূনতম সাবধানতা অবলম্বন না করার জন্য বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে নিকারাগুয়াকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করে আসছে। কিছু দেশের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার থাকায় নিকারাগুয়া ক্যারিবীয় দেশগুলোর দরিদ্র মানুষসহ এশিয়ার অনেক দেশের লোকজনের কাছে অভিবাসনের উদ্দেশে যাত্রায় নিরাপদ গন্তব্য হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো সময় ভাড়া করা প্লেনে করেও এখানে আসেন অভিবাসীরা।

এ বছর মেক্সিকো হয়ে প্রায় ১১ হাজার লোক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। মেক্সিকোর ইমিগ্রেশন এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে। এ ছাড়া এ বছর মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করায় ৪১ হাজার ৭৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সংখ্যা গত বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।