ফ্রান্স ছাড়ল ভারতীয় যাত্রী বোঝাই আটক রোমানীয় বিমান
মানবপাচার সন্দেহে ফ্রান্সের ভাত্রি বিমানবন্দরে ৩০০ ভারতীয় যাত্রীসহ আটকে রাখা হয়েছিল রোমানিয়ার একটি বিমান। অবশেষে দেশটির স্থানীয় সময় আজ সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) ফরাসি পুলিশ কর্তৃক প্রস্থানের ছাড়পত্র পেয়ে ভাত্রি বিমানবন্দর ছেড়েছে এ৩৪০ বিমানটি। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানায়, এয়ারবাস এ৩৪০ বিমানটি ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে দুবাই থেকে নিকারাগুয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। ২১ ডিসেম্বর জ্বালানি নিতে পশ্চিম প্যারিসের ভাত্রি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল।
মানবপাচারের শিকার হয়েছেন এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রীসহ বিমানটিকে আটকে রাখা হয়।
স্থানীয় সুরক্ষা এজেন্সির দেওয়া তথ্য অনুসারে, ওই ফ্লাইটে ২১ মাসের শিশুসহ বেশকিছু অভিভাবকহীন শিশু যাত্রীও রয়েছে। প্যারিস প্রসিকিউটর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মানবপাচারে জড়িত থাকার সন্দেহে দুজন যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। তবে, কোনো ধরনের পাচারের ঘটনা কিংবা ওই যাত্রীদের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ছিল কি না, এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্যাপক ঢল লক্ষ্য করা গেছে।
ফ্রান্সের স্যাম্পেন কাউন্ট্রির ছোট ভাত্রি বিমানবন্দরের জানালাগুলো যাত্রীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এ৩৪০ ফ্লাইটের ওই প্লেনটিকে বিমানবন্দরে ছিল। এর জেরে বিমানবন্দর থেকে অন্যান্য ফ্লাইটগুলো বাতিল করা হয়েছে এবং অবতরণ করতে আসা বেশকিছু ফ্লাইটের গতিপথ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ থেকে ছেড়ে আসা নিকারাগুয়ার রাজধানী মানাগুয়ার উদ্দেশে যাত্রা করা লিজেন্ড এয়ারলাইন্সের ওই চার্টার্ড ফ্লাইটের ১৫ জন ক্রুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটিতে তেল নেওয়ার জন্য থামে ফ্লাইটটি। তবে, আবার আকাশে উড়ার আগে হঠাৎ ফরাসি পুলিশ মানবপাচারের অভিযোগ তদন্তের জন্য বিমানবন্দরটি ঘিরে ফেলে। ভাত্রি বিমানবন্দরটি থেকে বেশিরভাগ সময়ে চার্টার্ড ও কার্গো ফ্লাইট পরিচালিত হয়ে থাকে।
মার্নের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথমে যাত্রীরা বিমানেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিমানটি ঘিরে রাখে পুলিশ। অবশ্য পরে যাত্রীদের সবাইকে বিমানবন্দরের প্রধান হলরুমে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে রয়েছে জরুরি বিভাগের কর্মী, ডাক্তার ও স্বেচ্ছাসেবীরা। যাত্রীদের খাবারসহ জরুরি চিকিৎসা সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার মানবপাচারের বিরুদ্ধে ন্যূনতম সাবধানতা অবলম্বন না করার জন্য বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে নিকারাগুয়াকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করে আসছে। কিছু দেশের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার থাকায় নিকারাগুয়া ক্যারিবীয় দেশগুলোর দরিদ্র মানুষসহ এশিয়ার অনেক দেশের লোকজনের কাছে অভিবাসনের উদ্দেশে যাত্রায় নিরাপদ গন্তব্য হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো সময় ভাড়া করা প্লেনে করেও এখানে আসেন অভিবাসীরা।