আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির, রাম আর তাঁবুতে নয় মন্দিরে থাকবেন : নরেন্দ্র মোদী

Looks like you've blocked notifications!
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিটিআই

ভারতের অযোধ্যায় নবমির্মিত রামমন্দির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) এই মন্দির উদ্বোধন করা হয় বলে জানিয়েছে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে। রামমন্দির চত্বরে দুপুরে জনসভায় ভক্ত এবং আমন্ত্রিতদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ২২ জানুয়ারি শুধু কোনও তারিখ নয়, নতুন কালের শুরু। ‘আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাম আর তাঁবুতে নয়, এ বার মন্দিরে থাকবেন।’ 

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার আজ তাদের বিভিন্ন প্রতিবেদনে মোদির বক্তব্য তুলে ধরেছে। গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, সকাল ১১টার পর রামমন্দির চত্বরে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হাতে পূজার ডালা নিয়ে ধীরে ধীরে গর্ভগৃহের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায় তাকে। তার পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে পূজায় বসেন তিনি। রামমন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার বিগ্রহের চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। হাতে পদ্মফুল নিয়ে পূজা করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন
আজ রামমন্দির উদ্বোধন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি

‘অভিজিৎ মুহূর্তের (বিশেষ মুহূর্ত) পর জনসভায় মোদি বলেন, ‘রামের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমাদের বিচারবিভাগ বিচার সুনিশ্চিত করেছে। আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির।’ তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমাদের চেষ্টা, ত্যাগে কোনও কমতি ছিল। তাই আমরা এতগুলো শতাব্দী ধরে এই কাজ করতে পারিনি। আজ সেই কাজ শেষ হলো। আশা করি, প্রভু রাম নিশ্চয়ই আমাদের ক্ষমা করে দেবেন।’

মোদি আরও বলেন, ২২ জানুয়ারি শুধু কোনও তারিখ নয়, নতুন কালের শুরু। তিনি বলেন, রাম আর তাঁবুতে নয়, এ বার মন্দিরে থাকবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রামকে দেশের নিত্যতা, নিয়ন্ত্রক, রাম ব্যাপক। আমরা যা অনুভব করছি সেটাই ওঁর কৃপা। এই সময় শুধু বিজয়ের নয়, একই সঙ্গে বিনয়েরও।

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯২ সালে শতাব্দীর প্রাচীন বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে ৫০ মিটার উঁচু হিন্দু দেবতা রামের উপাসনা করতে নির্মাণ করা হয়েছে এই মন্দির। সে সময় এই মসজিদ ভাঙার কারণে ভারতের ইতিহাসে স্বাধীনতার পর ছড়িয়ে পড়া ধর্মীয় দাঙ্গায় মারা যায় দুই হাজার মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। এর মাধ্যমে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি নড়ে উঠেছিল। তবে, ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জন্য রামমন্দির উদ্বোধন যুগব্যাপী দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

উদ্বোধনকে ঘিরে আগে থেকেই শুরু হয় প্রচারণা। গতকাল রোববার সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী হাজারও উৎফুল্ল জনতা লাউড স্পিকারে ধর্মীয় সুরের মূর্ছনায় মেতেছেন। সেজে আছে অযোধ্যার রাস্তাগুলো।

ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি আরও বলছে, প্রায় আড়াই হাজার সংগীত শিল্পী ১০০টির বেশি মঞ্চে সুরমূর্ছনা ছড়ান। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বের সড়কেও তৈরি হয়েছে তীরধনুকসহ দেবতা রামের হাজারও বিলবোর্ড।