ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানি স্থাপনায় হামলার অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রের
ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে ধারাবাহিক হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, এই সিরিজ হামলা কয়েকদিন ধরে চলতে পারে। তবে, কখন থেকে এই হামলা শুরু হবে তা নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। গত রোববার সিরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন জর্ডানের একটি ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ জানিয়ে আসছে, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা এই হামলা চালিয়েছে। তবে ‘টাওয়ার-২২’ নামে পরিচিত ওই সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় আরও ৪১ জন মার্কিন সেনা আহত হয়। হামলায় সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে অস্বীকার করে আসছে ইরান।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, তাদের গোয়েন্দারা মনে করেন, সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে, তা ইরানের তৈরি এবং একই ধরনের ড্রোন ওই দেশটি রাশিয়ায় সরবরাহ করেছিল ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন দেরিতে হলেও সামরিক জবাবের পক্ষে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘কোথায়, কখন ও কীভাবে আমরা এর জবাব দেব, তা আমরাই নির্ধারণ করব।’
কোনো নির্ধারিত ফর্মুলায় এই কাজ করা হবে না জানিয়ে লয়েড অস্টিন বলেন, ‘আমি মনে করি, সঠিক লোকদের এই দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িত চ্যালেঞ্জগুলোকে সবাই স্বীকৃতি দেবেন।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ ধরনের কাজ করার উপায় আছে। আর এ কারণেই এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে না। পুরো সময়জুড়ে এই বিষয়টিতে আমাদের দৃষ্টি থাকবে।’
বিশেষজ্ঞরা ঠিক কোন সময়ে এই হামলা চালানো হতে পারে, সে সম্পর্কে কিছু জানাননি। তারা জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ায় এই হামলা চালানো হতে পারে। তবে বেসামরিক লোকজনকে হামলা থেকে বাঁচাতে দৃষ্টিসীমা যখন ভালো থাকবে, তখনই হামলা চালানোর বিষয়ে জোর দিচ্ছেন তারা।
ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালানোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন। তবে বাইডেনসহ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা ড্রোন হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। তারা এটাও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে বড় আকারে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও নেবেন না তারা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিক বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বিভিন্ন জাহাজে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত বিদ্রোহী সংগঠন হুতির সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অভিযোগ করে আসছেন, গত অক্টোবরের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর ১৬০টিরও বেশি হামলা হয়েছে।