ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানি স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা
ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানি সৈন্য এবং তেহরান ভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) এ হামলা চালানো হয়। খবর এএফপির।
গত রোববারের ড্রোন হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইরান সমর্থিত বাহিনীকে দায়ী করে এলেও সরাসরি দেশটির ভূখণ্ডে হামলা চালায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আজ আমাদের জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। এটা চলবে আমাদের সময় ও পছন্দের হিসাব অনুযায়ী।’
বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় না মধ্যপ্রাচ্য বা পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক। তবে যারা আমাদের আঘাত করবে, তাদের এটা জানা উচিত–যদি আমেরিকার ক্ষতি হয়, তবে আমরা জবাব দেব।’
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, ইরানি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের পাশাপাশি তাদের সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে ৮৫টিরও বেশি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এসব হামলায় অংশ নিতে বোমারু বিমানগুলোকে উড়িয়ে আনা হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল লক্ষ্যের বোমা ব্যবহার ব্যবহার করা হয়। এসব হামলায় ইরানি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা কার্যালয় এবং রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আধঘণ্টা সময় ধরে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে গিয়ে দীর্ঘ যাত্রা শেষে মার্কিন বি-১ বোমারু বিমান অংশ নেয়।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, সাতটি আলাদা এলাকায় কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে চালানো এই হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য, এই হামলা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সামনে আরও হামলা চালানো হবে।
এদিকে, ইরাক এই হামলাকে তাদের ‘সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করেছে। বাগদাদে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর থেকেই ইরাকের প্রধানমন্ত্রী তার দেশ থেকে বিদেশি সৈন্যদের চলে যেতে বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, হামলার আগে ইরাকি সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল।