‘নওয়াজ-বিলওয়ালের সঙ্গে জোট নয়, প্রয়োজনে বিরোধী দলে বসবেন ইমরান’
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সরকার গঠন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি কোনো দল। জানা যায়নি কে হবেন প্রধানমন্ত্রী। আর বেশি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্রদের মতিগতি বুঝে উঠতে পারছে না কোনো দল। কারণ, এদের অধিকাংশই দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান সমর্থিত। যদিও ইমরান এখনও কারাগারে। আর সে অবস্থায় নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পিএমএল–এনের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সমর্থন দেবে বলে খবর আসে সম্প্রতি। অন্যদিকে, আজ শোনা যায়, সরকার গঠনে পিপিপির সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত ইমরান খান। যদিও পিটিআইনেতা ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলি সাইফ এই তথ্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, প্রয়োজনে বিরোধীদলে বসবেন, কিন্তু পিপিপি ও পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট করবেন না।’ খবর জিও টিভির।
পাকিস্তান ভিত্তিক গণমাধ্যমটি বলছে, পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগে ইমরান প্রস্তুতের তথ্যকে ‘বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন’ উল্লেখ করা হয়েছে। পিটিআইনেতা মোহাম্মদ আলি সাইফ এমনটা দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা পিপিপি ও পিএলএম-এনের সঙ্গে কথা না বলতে ‘কঠোরভাবে’ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগে ইমরান প্রস্তুতের তথ্য বিভ্রান্তিকর। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, প্রয়োজনে বিরোধীদলে বসবেন, কিন্তু পিপিপি ও পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট করবেন না।’
যদিও পাকিস্তান ভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যমটি তাদের পিটিআইয়ের একটি সূত্রের বরাতে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, ইমরান খান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পিপিপির বিরুদ্ধে অবস্থানে ধীরে ধীরে নমনী হচ্ছেন। তিনি দলটির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। সূত্রমতে, কারাবন্দি ইমরান পিপিপির সঙ্গে কথা বলতে ‘প্রস্তুত’। সূত্র বলছে, এরইমধ্য পিপিপির সঙ্গে কথা বলতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
জিও টিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বাধিক আসনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের জন্য পিপিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জোটবদ্ধ হওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ইমরানের দল। এমনকি, তারা নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পিটিআইও জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম-ফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামি এবং অন্যান্য জাতীয়তাবাদী দলগুলোর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেছে।
পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আফিস আলী জারদারি দেশটির সরকার গঠনে জোটগঠন প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাপ্রকাশের দুদিন পর এমন খবর এলো। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা মনে করি, জোট সরকার গঠনে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সঙ্গে আলোচনা হওয়া উচিৎ, যেমনটা আমরা মনে করি, সমঝোতা প্রক্রিয়ায় শুধু পিটিআই নয়, সব রাজনৈতিক দলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ও এর জনগণকে সফল করতে আমরা সবাইকে নিয়েই আমাদের অর্থনীতি, প্রতিরক্ষাবিষয়ক এজেন্ডা ও অন্যান্য অনুরূপ বিষয়গুলো নিয়ে এগোতে চাই এবং মিয়ান সাহেব ও অন্যান্য বন্ধুদের সফল করতে চাই।’