উত্তর গাজায় জাতিসংঘের সাহায্য পৌঁছাতে ইসরায়েলের বাধা

Looks like you've blocked notifications!
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার রাফাহ শহরে সারাদিনের রোজা শেষে ইফতার করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা গতকাল রোববার (২৪ মার্চ) বলেছে দুর্ভিক্ষের সর্বোচ্চ মাত্রায় ঝুঁকিতে থাকা উত্তর গাজায় মানবিক সহায়তা সামগ্রী পৌঁছাতে ইসরায়েল তাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাধা দিচ্ছে। খবর এএফপির।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সাহায্য সংস্থার প্রধান ফিলিপে লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টির সামনে উন্মোচিত হতে থাকা বিয়োগান্তক ঘটনাপ্রবাহের পরেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা ইউএনআরডব্লিউএ’র কোনো বহরকেই গাজার উত্তর অংশে প্রবেশের অনুমতি দেবে না।’

লাজারিনি আরও বলেন, ‘এটা ভয়ানক জঘন্য কাজ এবং মানুষ সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের সময় জীবন রক্ষাকারী সাহায্য সামগ্রী পৌঁছানোর প্রচেষ্টায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাধা দেওয়ার ঘটনা।’

তবে লাজারিনির বিবৃতির বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য বার্তা সংস্থা এএফপি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ তাতে সাড়া দেয়নি। 

ইউএনআরডব্লিউএ’র যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক জুলিয়েট তোওমা বিষয়টি ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তুলে ধরলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। বরং দুইবার সাহায্য বহর প্রবেশের জন্য অনুমতি চেয়ে পাঠানো চিঠি অগ্রাহ্য করা হয়। তবে অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো কারণ জানানো হয়নি।

গত ছয় মাস ধরে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলতে থাকা যুদ্ধের কারণে গাজা উপত্যকার লোকজন তীব্র মানবিক সহায়তা পণ্যের সঙ্কটে পড়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের অতর্কিত হামলার কারণে শুরু হয় এই যুদ্ধ।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে এক মূল্যায়নে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয় এখনই জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী মে মাস থেকে পুরো উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়বে।

এ বিষয়ে জুলিয়েট তোওমা জানান, গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ইউএনআরডব্লিউএ গাজা উপত্যকার উত্তর অংশে খাদ্য সহায়তা সামগ্রী সরবরাহ করতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সবশেষ সিদ্ধান্ত কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’

এ বষয়ে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিসের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ বলেন, ‘গাজার উত্তরে খাদ্য বহর আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র হাজার হাজার বাসিন্দাকে দুর্ভিক্ষের আরও কাছেই নিয়ে যাবে। এটা সিদ্ধান্ত অবশ্যই বাতিল করতে হবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গ্রেব্রেয়াসুস এ প্রসঙ্গে এক্স বার্তায় বলেছেন, ইউএনআরডব্লিউএ’র সাহায্য সরবরাহ আটকে দেওয়ার অর্থ হলো সত্যিকার অর্থে অভুক্ত মানুষের বেঁচে থাকার সামর্থ্যকে অগ্রাহ্য করা।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিষয়টির ওপর আলোকপাত করে এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে খারাপ যুদ্ধে গাজার ২৪ লাখ মানুষের অন্তহীন দুঃস্বপ্ন অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৩২ হাজার ২২৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।