আরব আমিরাতে বিক্ষোভে আটক বাংলাদেশিদের ক্ষমা করে দেশে পাঠানোর নির্দেশ
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের ঘটনায় আটক বাংলাদেশিদের ক্ষমা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ। তিনি আটকদের সাজা প্রত্যাহার করে তাদেরকে নিজ দেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। খবর খালিজ টাইমসের।
ইউএই অ্যাটর্নি জেনারেল চ্যান্সেলর ড. হামাদ আল শামসি সাজা বাস্তবায়ন না করার এবং তাদের দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করার আদেশ জারি করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব বাসিন্দাকে দেশটির প্রচলিত আইনকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মতামত প্রকাশের অধিকার রাষ্ট্র এবং এর আইনি কাঠামো দ্বারা সুরক্ষিত।
অ্যাটর্নি জেনারেল ড. হামাদ আল শামসি বলেন, দেশে মতামত প্রকাশের জন্য আইনানুগ উপায় রয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি জাতি এবং এর জনগণের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ড যেন সংঘটিত না হয়, তা নিশ্চিত করে।
আরব আমিরাতে দাঙ্গা ও বিক্ষোভের জন্য গত ২২ জুলাই তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগের পরে আরও ৫৪ জনকে দেশে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশটির সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে ইউএইতে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া এবং সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বেআইনিভাবে আরব আমিরাতে প্রবেশ এবং সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজন আসামিকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন।
৫৭ জনকে গ্রেপ্তার ও দোষী সাব্যস্ত করার পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশি মিশন থেকে দেশটির নাগরিকদের প্রতি স্থানীয় আইনকে সম্মান করার এবং নিষিদ্ধ কার্যকলাপে জড়িত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে আইন অমান্যে ভিসা বাতিল, জেল, জরিমানা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়।
অপরদিকে আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। শিগগির তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান৷ এ সময় নতুন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ায় ইউনূসকে তিনি অভিনন্দন জানান৷
সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার৷ বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে থেকে ২১ লাখ ৫৭ হাজার বাংলাদেশি কাজের জন্য দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন৷ গত অর্থবছরে ৪৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসীরা৷