নাসরুল্লাহর মৃত্যুতে শোকার্ত বৈরুতবাসী এখনও ভীত, ক্ষুব্ধ ও ক্লান্ত
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অবিরাম বোমাবর্ষণ চলছেই এবং এটি থামার কোনো পরিষ্কার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো পুরো বৈরুতজুড়ে বোমা ফেলছে এবং লোকজন তাদের জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন বৈরুতবাসী এখনও ভয়, ক্ষোভ আর ক্লান্তি নিয়ে সময় পার করছে। খবর আলজাজিরার।
গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু করে শনিবার ভোররাত পর্যন্ত বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়েহ এলাকার ছয়টি আবাসিক ভবনে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো। এই হামলায় লেবানন ভিত্তিক ইরানপন্থি মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে তাকে হত্যার পরও থেমে নেই ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব। ওই এলাকাটিতে একের পর এক হামলা চলতেই থাকে। আর পরে রাজধানী বৈরুতের বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে হামলা সম্প্রসারিত হয়। পুরো বৈরুতের অধিবাসীরা এখন এই ভয়ঙ্কর হামলার শিকার। বোমাবর্ষণের পাশাপাশি ইসরায়েলি ড্রোনগুলোও সারা দিন ধরে বৈরুতের আকাশে উড়ছে।
এদিকে, হিবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো কথা বলতে এসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, উত্তরাঞ্চলের জন্য এখন দুটি লক্ষ্য রয়েছে তার। এর একটি হলো, ইসরায়েলের যেসব নাগরিক তাদের শহর ও বসতি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে আনা এবং অন্য লক্ষ্যটি হলো উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা।
ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য গতকাল শনিবার পুরো দিনজুড়ে লেবাননে হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী উত্তরে আক্রমণ চালানোর কৌশল সম্পর্কে নতুন পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। আর এর মাধ্যমেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনমূলক অভিযানের শঙ্কা আরও জোড়ালো হচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেম শহরে গতকাল শনিবার রাস্তায় নেমে আসে হাজারো জনতা। তেল আবিবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে এক বিক্ষোভে ওইসব ইসরায়েলি নাগরিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, গাজা উপত্যকায় হামাসের হাতে থাকা শতাধিক পণবন্দিকে মুক্ত করতে এখনই যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলবে এবং তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।