ইরানে হামলা করল ইসরায়েল, তেহরানে বিস্ফোরণ
ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ মাসের শুরুতে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তেহরান ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে শনিবার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে ‘সুনির্দিষ্ট হামলা’ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। রাজধানী তেহরান থেকে হামলার কারণে বেশ কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা এএফপির সাংবাদিক।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, গত কয়েক মাসে ইরান থেকে ইসরায়েল ভূখণ্ডে একের পর এক হামলার জবাবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালাচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তার জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইসরায়েল। এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্ত বলেছিলেন, ইরানের বিরুদ্ধে হামলা হবে মরণঘাতী, সুনির্দিষ্ট ও আচমকা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ইরানপন্থি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলায় এক হাজার ২০৬ জন লোক নিহত হয়। এরপর গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। পরবর্তীতে ইসরায়েল তার দেশের উত্তরের সীমানা নিরাপদ করতে লেবানন আক্রমণ করে এবং সেখানে থাকা ইরানপন্থি হিজবুল্লাহ মিলিশিয়ার বিভিন্ন লক্ষবস্তুতে ব্যাপক হামলা চালায়।
চলতি বছরের ১ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলে দ্বিতীয়বারের মতো সরাসরি হামলা চালায়। ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ও ইরানের বিপ্লবী গার্ড রেজিমেন্টের জেনারেল আব্বাস নিলফোরোসানকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ওই হামলা চালানো হয় বলে জানায় ইরান। এ ছাড়া ১ জুলাই তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধের কথাও উল্লেখ করে ইরান। এই হামলার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছে।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন শনিবার জানায়, রাজধানী তেহরানের আশপাশে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। অনুষ্ঠানে টেলিভিশন উপস্থাপক বলেন, ‘কয়েক মিনিট আগে তেহরানের আশপাশে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।’ পরে জানানো হয় মোট ছয়টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে ইরানের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের কাছে প্রধান তেল শোধনাগারে কোনা বিস্ফোরণ বা আগুনের দেখা মিলেনি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল, তাদের অবকাঠামোগুলো হামলার শিকার হলে আরও ‘শক্ত জবাব’ দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বিপ্লবী গার্ডের জেনারেল রসুল সানাইরাদ বলেন, তার দেশের পারমাণবিক স্থাপনা আক্রান্ত হলে সেটিকে নিরাপত্তার ‘লাল সীমা’ অতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র শন সাভেট বলেছেন, ইরানের সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা ইরানের ১ অক্টোবরের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ এবং তা ইসরায়েল নিজেদের রক্ষার জন্য করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, এই হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।