ভারতে প্রথম সামরিক বিমানের বেসরকারি কারখানার উদ্বোধন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী স্যাঞ্চেজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) গুজরাটের ভদোদরায় টাটা-এয়ারবাস কারখানার উদ্বোধন করেন। এই কারখানায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য সি২৯৫ সামরিক বিমান তৈরি হবে। এয়ারবাসের সহযোগিতায় টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড(টিএএসএল) এই বিমান তৈরি করবে। এটাই হবে ভারতের প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে সামরিক বিমান তৈরির কারখানা।
ভারত নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও দৃঢ় করতে চাইছে। একইসঙ্গে স্পেন ভারতে তাদের বিনিয়োগ বাড়াতে চাইছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশের প্রত্যাশা পূর্ণ হচ্ছে।
ভদোদরায় প্যারেডের মধ্য দিয়ে স্যা়ঞ্চেজকে অভিবাদন জানানো হয়। তারপর তিনি ও মোদি টাটা এয়ারক্রাফট কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন।
২০২১ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেসের সঙ্গে ৫৬টি সি২৯৫ মাল ও সেনাবহনকারী বিমান কেনার জন্য ২৫০ কোটি ডলারের একটা চুক্তিতে সই করে।
এরমধ্যে ১৬টি বিমান স্পেনে তৈরি করা হয়েছে এবং তা গতবছর ভারতকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪০টির উৎপাদন হবে ভারতে।
ভদোদরার এই কারখানায় ২০২৬ সালে প্রথম মেড ইন ইন্ডিয়া সি২৯৫ বিমান তৈরি হবে।
স্যাঞ্চেজ জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী ভারতকে শিল্পের পাওয়ারহাউস করে তুলতে চান। এই প্রকল্প সেই স্বপ্নপূরণের একটা ধাপ। এই প্রকল্প বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চুম্বকের মতো কাজ করবে। এয়ারবাস ও টাটার এই যৌথ প্রকল্পের ফলে ভারতের এয়ারোস্পেস শিল্পে নতুন দিগন্ত দেখা দেবে। অন্য ইউরোপীয় সংস্থাও এরপর বিনিয়োগে উৎসাহ দেখাবে। এই কারখানা ভারত-স্পেন সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে তাই নয়, মেক ইন ইন্ডিয়া ও মেক ফর ওয়ার্ল্ড মিশনকেও গতি দেবে।”
স্পেন হলো ভারতে বিনিয়োগের তালিকায় ১৬তম স্থানে থাকা রাষ্ট্র। ভারতে ২৮০টির বেশি স্পেনের কোম্পানি আছে।
স্পেন সরকার ভারতে রেল, শক্তি, ওষুধ, নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে আরো বিনিয়োগের সুযোগ চায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, এই প্রকল্পের ফলে ভারত শিগগিরই বিমান রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারবে। অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থার চাহিদাও মেটাতে পারবে।
মোদি বলেছেন, সরকার মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর ওয়ার্ল্ড মিশন নিয়েছে। এই প্রকল্প তারই একটা উদাহরণ। ২০২২ সালে এই কারখানা তৈরি শুরু হয়। এখন তা উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত।
মোদি বলেছেন, ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলো অন্য দেশ থেকে এক হাজার ২০০ বিমান কিনছে। ভারতের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা বিশ্বের অন্য উৎপাদকদের নেই। এই কারখানা ভবিষ্যতে অসামরিক বিমান তৈরি ও ডিজাইন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।