পাকিস্তানে রেলস্টেশনে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত ২৪, আহত ৪৬
পাকিস্তানের কোয়েটা রেলস্টেশনে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৪ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছে। আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর ডন নিউজের।
বেলুচিস্তানের মাস্তুং জেলায় একটি বালিকা বিদ্যালয় এবং একটি হাসপাতালের কাছে বোমা বিস্ফোরণে পাঁচ শিশুসহ আটজন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর নতুন করে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। পাকিস্তান, বিশেষ করে বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে গত এক বছরে সন্ত্রাসী তৎপরতা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোয়েটা বিভাগের কমিশনার হামজা শাফকাত হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি কয়েকজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যও নিহত হয়েছেন বলেও জানান হামজা শাফকাত।
কমিশনার হামজা শাফকাত গণমাধ্যমকে বলেন, বিস্ফোরণটি আনুমানিক শনিবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে ঘটে। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর দেহও শনাক্ত করা হয়েছে।
হামলায় আহতদের জন্য রক্তদান করতে জনসাধারণের কাছে আবেদন জানান হামজা শাফকাত।
কমিশনার হামজা শাফকাত জনসাধারণকে রেলওয়ে স্টেশন, কোয়েটা ট্রমা সেন্টার ও সিভিল হাসপাতালের দিকে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনায় জোড়া হামলার ঝুঁকি রয়েছে।’
কোয়েটার এই কমিশনার বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা শহরটি নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রেখেছি এবং তল্লাশি পরিচালনা করছি। যেকোনো ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
এর আগে কোয়েটার সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোহাম্মদ বালোচ সাংবাদিকদের বলেন, তার দেখা ফুটেজ অনুসারে ঘটনাস্থলে ‘প্রায় ১০০ জন’ উপস্থিত ছিলেন। বিস্ফোরণের সময়, জাফর এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন প্ল্যাটফর্ম থেকে পেশোয়ার যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।
বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শহিদ রিন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। বোমা ডিসপোজাল স্কোয়াড ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
কোয়েটার একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) কোয়েটার রেলস্টেশনে এ বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে। এর আগে দেড় মাসেরও বেশি সময় স্থগিত থাকার পর গত ১১ অক্টোবর থেকে কোয়েটা ও পেশোয়ারের মধ্যে ট্রেন পরিষেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছিল পাকিস্তান রেলওয়ে। গত ২৬ আগস্ট বিএলএর বিস্ফোরণে কোলপুর ও মাচের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলসেতু ধ্বংস হলে সারা দেশে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল।