ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এ ছাড়া ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধেও একই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত হামাসের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে। হামাসের সামরিক প্রধান হোমাম্মেদ দেইফসহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই ব্যক্তিদের যেকোনো দেশ গ্রেপ্তার করতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই রায় ইহুদিবিদ্বেষী। অন্যদিকে, ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মানবেন বলে জানিয়েছেন। গাজায় যেভাবে ‘হত্যালীলা’ চালানো হয়েছে, তা নিয়ে রায় দিতে গিয়েই বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, এই রায়ের কোনো গুরুত্ব নেই। তিনি একে ইহুদিবিদ্বেষী রায় বলে দাবি করেছেন। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট বলেছেন, ‘হেগের আদালতের এই বিচার স্মৃতিতে থেকে যাবে। ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং হত্যাকারী হামাস নেতাদের এই রায় একই আসনে বসিয়েছে। এই রায় হামাসের সহিংসতাকে সমর্থন করেছে। তারা যেভাবে শিশুদের হত্যা করেছে, নারীদের নির্যাতন করেছে, বৃদ্ধদের বিছানা থেকে তুলে নিয়ে গেছে, তা সমর্থন পেল এই রায়ে।’ গ্যালেন্টের ভাষ্য, এই রায় আত্মরক্ষার অধিকারকে মর্যাদা দেয়নি।
এ বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, তিনি এই রায়কে সম্মান জানাবেন। টেলিভিশনের একটি সাক্ষাৎকারে ট্রুডোকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে তিনি সম্মান জানাবেন। কারণ কানাডা আন্তর্জাতিক আইন মানতে দায়বদ্ধ।
যুক্তরাজ্যের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারাও আন্তর্জাতিক আইন ও আদালতকে সম্মান করেন। তবে নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যুক্তরাজ্য গ্রহণ করছে কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বরেল ইইউর ২৭টি দেশের প্রধানকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, তারা আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মানতে দায়বদ্ধ। আন্তর্জাতিক আদালতের রায় ঘোষণার পরেই এ মন্তব্য করেন বরেল।
এদিকে এই পরিস্থিতির মধ্যেই হিজবুল্লার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলে পৌঁছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। সংঘর্ষবিরতি নিয়ে এর আগেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বারবার তা ভেস্তে গেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত তাদের স্পষ্ট অবস্থান জানায়নি।