লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে ৫০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে একের পর এক পুড়ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে দাবানলের কারণে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দাবানলের কারণে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, এ দাবানলের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে।
আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ সম্ভবত ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এবং মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে স্থান পাবে, যার মোট অর্থনৈতিক ক্ষতি কয়েক বিলিয়ন ডলারের।
আবহাওয়া পূর্বাভাস পরিষেবা অ্যাকু ওয়েদারের প্রাথমিক অনুমানে, ক্ষয়ক্ষতি ও মোট অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৫২ বিলিয়ন থেকে ৫৭ বিলিয়ন ডলার বলে মনে করা হচ্ছে। যদি এই আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে, তবে এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক জে পি মরগান গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস এবং এর আশপাশের পাঁচটি দাবানলে ইতোমধ্যেই হাজার হাজার একর জমি পুড়ে গেছে। এর ফলে কমপক্ষে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। দাবানলে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন।
যদিও পুরো খরচের পরিমাণ জানতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে, তবুও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যয়বহুল বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেখে মনে হচ্ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতি সম্ভবত ২০১৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে ক্যাম্প ফায়ারের ৩০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির চেয়েও বেশি হবে। যাকে এখন পর্যন্ত রাজ্যের সবচেয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির দাবানল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে, ২০২৩ সালে মাউইয়ের দাবানলে ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছিল।
এনওএএ’র অনুমান অনুসারে, ২০০৫ সালে ঘূর্ণিঝড় ক্যাটরিনা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ মার্কিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যার আনুমানিক ক্ষতি ছিল ২০০ বিলিয়ন ডলার।
অ্যাকু ওয়েদার জানিয়েছে, সান্তা মনিকা ও মালিবুর আশপাশে জ্বলন্ত আগুনে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়িগুলোর মধ্যে একটি পুড়ে গেছে, যার গড় মূল্য ২০ লাখ ডলারের বেশি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) জে পি মরগান তার বীমাকৃত ক্ষতির অনুমান ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে।
অনেক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, তাদের বীমা বাতিল করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য পূর্বাভাসের কারণে বীমা শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু বড় বীমা কোম্পানি প্যাসিফিক প্যালিসেডের মতো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এবং দাবানল অঞ্চলে পলিসি খোলা বন্ধ করে দিয়েছে বা নতুন নিবন্ধন বন্ধ করে দিয়েছে।
সরকারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়ায় বাড়ির মালিকদের পলিসি নিবন্ধন না করার হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।