উড্ডয়নের মাঝপথে ভেঙে পড়ল স্পেসএক্সের মহাকাশযান
মার্কিন মহাকাশযান প্রস্তুতকারক এবং মহাকাশ যাত্রা সেবা প্রদানকারী কোম্পানি স্পেসএক্সের স্টারশিপ মহাকাশযানটি উড্ডয়নের মাঝপথে ভেঙে পড়েছে। ফলে ধ্বংসাবশেষ এড়াতে বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট ডাইভার্ট করতে বাধ্য হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্সের স্টারশিপ প্রথম পর্যায়ের বুস্টার ধরার পূর্ব পর্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করলেও, পরবর্তীতে নতুন প্রজন্মের আনক্রুড মহাকাশযানটি ধ্বংস হয়ে যায়।
বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ‘সংক্ষিপ্তভাবে’ বলেছে, মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ যেখানে পড়ছে, সেই এলাকার চারপাশে বিমানের গতি কমিয়ে দেওয়া হয় এবং ডাইভার্ট করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একজন মুখপাত্র বলেছেন, স্বাভাবিক কার্যক্রম আবারও শুরু হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুসারে, সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ এড়াতে কমপক্ষে ২০টি ফ্লাইট তাদের রুট পরিবর্তন করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মহাকাশযানটির কিছু অংশ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করছে।
মাস্ক বলেন, অক্সিজেন বা জ্বালানি লিক হওয়ার কারণে মহাকাশযানটি ভেঙে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে পরবর্তী উড্ডয়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘লিকের জন্য স্পষ্টতই দুবার পরীক্ষা করা ছাড়াও, আমরা সেই আগুন দমনের কৌশল যোগ করব এবং সম্ভবত বায়ু চলাচল এলাকা বাড়াব।’ পরবর্তী উড্ডয়নটি আগামী মাসের পরে হতে পারেন বলে জানান তিনি।
মাস্ক এর আগে মিশন ব্যর্থ হওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং ধ্বংসাবশেষ পড়ার ফুটেজ পোস্ট করেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘সাফল্য অনিশ্চিত, কিন্তু বিনোদন নিশ্চিত!’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ব্রাউনসভিলের কাছে উৎক্ষেপণ স্থান থেকে উড্ডয়নের প্রায় সাড়ে আট মিনিট পর স্পেসএক্সের গ্রাউন্ড কন্ট্রোলের সঙ্গে প্রোটোটাইপ যানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথম উড্ডয়নে থাকা এই যানটিতে ১০টি ডামি উপগ্রহ ছিল এবং পৃথিবীর চারপাশে আংশিক চক্র সম্পন্ন করার কথা ছিল।
কোম্পানিটি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলে, ‘স্টারশিপটি তার উড্ডয়নের সময় দ্রুত অপ্রত্যাশিতভাবে ভেঙে পড়ে।’
এই মিশনটি ছিল স্পেসএক্সের স্টারশিপের সপ্তম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট। মাস্ক পরিকল্পনা করছেন এই মহাকাশযানটি একদিন মঙ্গল গ্রহে মানুষ ও পণ্য পরিবহণ করবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন প্রথমবারের মতো সফলভাবে তাদের নিউ গ্লেন রকেট কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করে, যা বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণের দৌড়ে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।