পণবন্দিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি ভাঙার হুমকি ইসরায়েলের
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/israayyel_yuddhbirti_thaamb.jpg)
আগামী শনিবার দুপুরের মধ্যে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি ভেঙে তীব্র লড়াইয়ের হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। খবর বিবিসির।
নেতানিয়াহু বলেছেন, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আর কোনো পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে হামাসের ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি এর পাল্টা জবাব হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনীকে গাজার অভ্যন্তরে ঢোকার ও উপত্যকাটি ঘিরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী অবশ্য সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি তিনি বাকি ৭৬ জন পণবন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছেন, নাকি শনিবার মুক্তি পেতে যাওয়া তিনজনের কথা বলেছেন। অবশ্য তার একজন মন্ত্রী বলেছেন, নেতানিয়াহু ‘সবার’ কথাই বলেছেন।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল তিন সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, এমনকি গাজাবাসীদের জন্য মানবিক সহায়তার কাজে বাধা দিয়েছে। তবে ইসরায়েল এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই বিবৃতির পর হামাস বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ইসরায়েল যেকোনা ধরনের জটিলতা বা দীর্ঘসূত্রতার জন্য দায়ী থাকবে।
এ সপ্তাহ শেষে নির্ধারিত বন্দিবিনিময়ের বিষয়টিকে দেরি করে দেওয়ার ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি বাতিলের জন্য ইসরায়েলের প্রতি যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাই যেন বাস্তব হতে যাচ্ছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, শনিবারের মধ্যে সব পণবন্দিকে মুক্তি না দিলে ‘নরক ভেঙে পড়বে’ হামাসের ওপর।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকে স্বাগত জানিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন ও বন্দিদের মুক্তি না দেওয়ার বিষয়ে হামাসের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আমি গত রাতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গাজা উপত্যকা ঘিরে ফেলার এবং এর ভেতরে প্রবেশ করার নির্দেশনা দিয়েছি।’
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘এই নির্দেশনা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।’
এরপর নেতানিয়াহু সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার পূর্ণ অনুমোদন রয়েছে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/12/israayyel_yuddhbirti_inaar.jpg)
নেতানিয়াহু বলেন, ‘শনিবার দুপুরের মধ্যে হামাস যদি আমাদের পণবন্দিদের মুক্তি না দেয়, তবে যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাবে এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।’ তবে তিনি পণবন্দি বলতে সব পণবন্দিকে বুঝিয়েছেন কিনা সে সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে।
একটি সূত্র ইসরায়েলি পত্রিকা হারেটজকে বলেছেন, শনিবারের পরিকল্পিত তিনজন পণবন্দিকে মুক্তি দিলে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যাবে।
পরে ইসরায়েলের পরিবহণমন্ত্রী এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য মিরি রেগেভ তার এক্স একাউন্টে এক পোস্টে বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর তা হলো শনিবার সবাইকে মুক্তি না দিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবৃতির কথাই আমরা মেনে চলব।’
এদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া দক্ষিণ কমান্ডকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রিজার্ভ বাহিনীসহ অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, যুদ্ধপরবর্তী গাজার নিয়ন্ত্রণ ও ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনার বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। তারা বলেছে, এই উদ্যোগ গাজাকে খালি করে ফেলার একটি পরিকল্পনা।