যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াবে না ব্রাজিল
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/ptaakaa.jpg)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাজিল সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী আলেকজান্দ্রে পাদিলহা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর আলেকজান্দ্রে পাদিলহা এ মন্তব্য করেন।
কানাডার পর ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত রপ্তানিকারক দেশ। ব্রাজিল ২০২৪ সালে ৪.০৮ মিলিয়ন টন ধাতু সরবরাহ করেছে।
মন্ত্রী আলেকজান্দ্রে পাদিলহা সাংবাদিকদের বলেন, সরকার এ বিষয়ে মোটেও আলোচনা করেনি। তবে, বাণিজ্যিক অচলাবস্থার বিরোধিতা করেছেন। সাংবাদিকরা শুল্ক আরোপে পাল্টা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
আলেকজান্দ্রে পাদিলহা আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোনো বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানোর আগ্রাহ ব্রাজিলের নেই এবং এর জন্য উৎসাহিতও করবে না। গত মাসে প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার করা মন্তব্যের বিপরীতে এ মন্তব্য করলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা গত মাসে বলেছেন, ট্রাম্প যদি ব্রাজিলের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন তাহলে প্রতিশোধমূলক পাল্লাটা ব্যবস্থা নেবে ব্রাজিল।
প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা আরও বলেন, এটা খুবই সহজ, যদি তিনি (ট্রাম্প) ব্রাজিলের পণ্যের ওপর কর আরোপ করেন, তাহলে ব্রাজিলও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানি করা পণ্যের ওপর কর আরোপ করবে।
৭৯ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে চাই।’
ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী ফার্নান্দো হাদ্দাদ বলেন, ট্রাম্পের আরোপিত একতরফা শুল্ক বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিপরীতমুখী। তবে এই নতুন শুল্ক কেবল ব্রাজিলকেই লক্ষ্য করে না। বরং পুরো বিশ্বকে লক্ষ্য করে।
অর্থমন্ত্রী ফার্নান্দো হাদ্দাদ আরও বলেন, ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কীভাবে জানাবে তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্রাজিল অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মার্কিন উৎপাদকদের অন্যায্য প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে বাধা দেওয়ার জন্য একই ধরনের ইস্পাত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে, আমদানি কোটাতে সম্মত হওয়ার পরে ব্রাজিলকে শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এজিএল কার্গো রপ্তানি কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক জ্যাকসন ক্যাম্পোস এএফপিকে বলেন, ব্রাজিল প্রতিশোধের পরিবর্তে কূটনীতির পথ বেছে নিতে পারে। তিনি বলেন, কূটনীতির মাধ্যমে আলোচনা করা হবে অন্যতম বিকল্প।
আমেরিকার চেম্বার অফ কমার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা আলোচনামূলক সমাধান আশা করছে। কারণ ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্ক এই খাতে ব্রাজিলের রপ্তানিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ব্রাজিল ৫.৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ইস্পাত এবং লোহা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে, যা ব্রাজিলের রপ্তানির প্রধান গন্তব্য। একই বছরে ব্রাজিল আমেরিকার বাজারে ২৬৭ মিলিয়ন ডলারের অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানি করেছে, যা ব্রাজিলের বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের ১৬.৭ শতাংশের সমান।