যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত অন্তত ২০

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র মিসৌরিতেই প্রাণ গেছে ১২ জনের। খবর বিবিসির।
টেক্সাসে ভয়াবহ ধূলিঝড়ের কারণে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। এ ছাড়া ওকলাহোমা ও আরকানসাসেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
পাওয়ারআউটেজ নামে একটি সংস্থা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত টেক্সাস, মিসৌরি এবং ইলিনয়সহ ছয়টি রাজ্যে দুই লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, এই অঞ্চলটিতে আরও ভয়াবহ আবহাওয়া আঘাত হানতে পারে। মধ্য মিসিসিপি, পূর্ব লুইজিয়ানা এবং পশ্চিম টেনেসিতে টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এ ছাড়া আলাবামা ও আরকানসাসসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আকস্মিক বন্যার সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, এই বন্যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
শনিবার সকালে মধ্য মিসিসিপিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অর্থাৎ টর্নেডো ওয়ার্নিং জারি করা হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘এটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি, যেখানে একাধিক ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী টর্নেডো তৈরি হতে পারে।’

মিসৌরির গভর্নর মাইক কেহো বলেছেন, ‘টর্নেডো ও প্রবল ঝড়ে মিসৌরির বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, বহু প্রাণহানি ঘটেছে।’
মিসৌরির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত ২৫টি কাউন্টিতে ১৯টি টর্নেডো আঘাত হেনেছে।
এদিকে, আরকানসাসে তিনজন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজ্যের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প আগাম দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য তার রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
এনডব্লিউএস জানিয়েছে, রোববারের (১৬ মার্চ) মধ্যে ঝড়ের তাণ্ডব আলাবামা, ফ্লোরিডা এবং জর্জিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এদিকে, টেক্সাসের ধূলিঝড়ে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮টি গাড়ি একসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির সার্জেন্ট সিন্ডি বার্কলে বলেন, ‘এটি আমার দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ধূলিঝড় থামার পর বোঝা গেছে গাড়িগুলো একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল।’

টেক্সাস ও ওকলাহোমায় এই ভয়াবহ ঝড় ১০০টিরও বেশি দাবানলের সৃষ্টি করেছে। এতে কয়েকটি বিশাল ট্রাক উল্টে গেছে এবং হাজার হাজার একর জমি পুড়ে গেছে।
ওকলাহোমার ফরেস্ট্রি সার্ভিস জানিয়েছে, সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল ‘৮৪০ রোড ফায়ার’ নামে পরিচিত, যা ইতোমধ্যেই ২৭ হাজার ৫০০ একর এলাকা জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং একেবারেই নিয়ন্ত্রণে আসেনি।