থাইল্যান্ডে ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা ক্ষীণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেক সম্মেলনে অংশ নেবেন। তবে সম্মেলনের ফাঁকে তাঁদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলের ৩-৪ তারিখে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিমসটেক সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস একই মঞ্চে থাকবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন যে, ঢাকা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছে।
তবে তিনজন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মতে, বর্তমান কূটনৈতিক পরিস্থিতি দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে সৌজন্যমূলক কথা বলা বা মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা ক্ষীণ।’ তিনি আরও জানান, ‘প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো না কোনো সদস্য ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হোসেন বৃহস্পতিবার এএনআইকে বলেন, ‘আমরা কূটনৈতিকভাবে ভারতকে অনুরোধ করেছি যাতে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে আমাদের দুই নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়।’
বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতামূলক সংস্থা বিমসটেকের সদস্য দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। এবারের সম্মেলন এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এক নিম্নমুখী অবস্থায় রয়েছে।
ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও চরমপন্থিদের মুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

এদিকে, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ এনেছে। হাসিনা ভারতে আসার অনুমতি পেয়েছিলেন স্বল্প সময়ের নোটিশে এবং বর্তমানে তিনি দিল্লির একটি নিরাপদ স্থানে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হাসিনার ভার্চুয়াল বক্তব্য এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রতি আহ্বান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ক্ষুব্ধ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ওমানে ভারত মহাসাগর সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এটাই ছিল গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনা।