ট্রাম্পের হুমকির মুখে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় শপথ নেওয়ার পরপরই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যান্য দেশের সঙ্গে কানাডার সব পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি। এদিকে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি মোকাবেলায় আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা।
আজ রোববার (২৩ মার্চ) কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও শক্তিশালী ম্যান্ডেটের আশা করছেন তিনি। রোববার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
সরকারি একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, কার্নি স্থানীয় সময় রোববার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কানাডার ৪১ মিলিয়ন জনসংখ্যার শক্তিশালী জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।
জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে কানাডার মধ্যপন্থি লিবারেল পার্টি। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নি কখনও বৃহত্তর কানাডিয়ান ভোটারদের মুখোমুখি হননি।
এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা লিবারেল সরকার গভীর অজনপ্রিয়তার মধ্যে পড়েছিল। তবে ট্রাম্পের হুমকির কারণে কার্নি কানাডিয়ান দেশপ্রেমের ফলে নতুন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের আশা করছেন।
প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্নি ঘোষণা করেন যে, তিনি অক্টোবরের বেশ কয়েক মাস আগে সংসদ নির্বাচন করছেন, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।
ট্রাম্প তার উত্তর প্রতিবেশীর সার্বভৌমত্ব এবং সীমান্তকে বারবার কৃত্রিম বলে উড়িয়ে দিয়ে এবং ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে কার্নিকে ক্ষুব্ধ করেছেন।
ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের সঙ্গে এই অশুভ মন্তব্যও যুক্ত হয়েছে। কানাডা থেকে আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যা কানাডার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
কার্নি বৃহস্পতিবার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এডমন্টনে এক বক্তৃতায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সংকটের সময়ে সরকারের একটি শক্তিশালী এবং স্পষ্ট ম্যান্ডেট প্রয়োজন।
জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অভিবাসনের মতো ঘরোয়া বিষয়গুলো সাধারণত কানাডার নির্বাচনে প্রাধান্য পায়। তবে এই বছর একটি মূল বিষয় তালিকার শীর্ষে রয়েছে তাহলো—ট্রাম্পকে কে সবচেয়ে ভালোভাবে সামলাতে পারবে। দেশটি হলো ন্যাটো মিত্র এবং ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ অংশীদার কানাডা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর প্রতিবেশীর প্রতি ট্রাম্পের প্রকাশ্য শত্রুতা কানাডিয়ার রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে উল্টে দিয়েছে।
৬০ বছর বয়সী কার্নি তার কর্মজীবন নির্বাচনী রাজনীতির বাইরে কাটিয়েছেন। তিনি গোল্ডম্যান শ্যাক্সে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন এবং কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, তারপর ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কার্নির হাত শক্তিশালী করার জন্য কানাডিয়ানরা যদি দুটি বড় দলের মধ্যে একটিকে বৃহৎ ম্যান্ডেট দিতে চায়, তাহলে ছোট বিরোধী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।