পোপ ফ্রান্সিসকে বিশাল জনসমাগমে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন

আর্জেন্টাইন পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনের শুরুতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় শেষ বিদায় জানাতে হাজার হাজার শোকাহত মানুষ হাজির হয়েছেন। সকাল ১১টা (গ্রিনিচ মান সময় ০৯০০) থেকে ব্যাসিলিকার দরজা খুলে দিলে দীর্ঘ সারিতে থাকা তীর্থযাত্রী ও পর্যটকরা খোলা কফিনের পাশে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন। খবর এএফপির।
২০১৩ সালে এক দশমিক চার বিলিয়ন ক্যাথলিকদের নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া সংস্কারপন্থি ফ্রান্সিস সোমবার (২১ এপ্রিল) ৮৮ বছর বয়সে মারা যান। তিনি সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।
পোপের মরদেহ রাখা হয়েছে লাল আস্তরণযুক্ত কাঠের কফিনে। তিনি পরেছিলেন পোপীয় পোশাক—লাল চাসুবল, সাদা মিত্রা, পায়ে কালো জুতা ও আঙুলের মাঝে ছিল রোজারিও।
আগামী তিন দিন কফিনটি মাইকেলেঞ্জেলোর আঁকা গম্বুজের নিচে অবস্থিত অলটার অব দ্য কনফেশন-এর সামনে একটি নীচু বিয়ারে রাখা থাকবে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৮টা (গ্রিনিচ সময় ১৮০০) কফিনটি বন্ধ করে দেওয়া হবে, শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে শনিবার।
৬৭ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত নার্স ভিনচেঞ্জা নোসিলা ভোর ৪টায় রোমের দক্ষিণে ফর্মিয়া থেকে রওনা দিয়ে পোপের মরদেহ প্রথম দেখতে আসেন। তিনি বলেন, ‘এটা খুব আবেগময় ছিল। তারা বেশি সময় দেয় না, হেঁটে যেতে হয়, দ্রুত বিদায় জানিয়ে বের হয়ে আসতে হয়।’
কার্ডিনালদের শোভাযাত্রা
কর্তৃপক্ষ জানায়, দরজা খোলার সময় প্রায় ২০ হাজার মানুষ ব্যাসিলিকায় প্রবেশের অপেক্ষায় ছিলেন। ভিতরে লোকজন দশ সারি হয়ে কফিনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন।
এর আগে ভোরে, ১২ বছরব্যাপী পোপিয় দায়িত্বকালীন তাঁর বাসস্থান ‘কাসা সান্তা মার্তা’ চ্যাপেল থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা পর্যন্ত পোপের কফিনটি শোভাযাত্রায় আনা হয়।
কার্ডিনাল, যাজক ও সুইস গার্ডদের সঙ্গে ছিল ঘণ্টার ধ্বনি ও মানুষের করতালি। এ সময় বহু মানুষ ছবি তোলেন।
শনিবারের শেষকৃত্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়ামসহ বিশ্বের বহু রাষ্ট্রপ্রধান ও লক্ষাধিক তীর্থযাত্রী অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শেষকৃত্যের পর তাঁর মরদেহ রোমের সান্তা মারিয়া মেজোরে পোপিয় গির্জায় সমাহিত করা হবে।
ইতালি আগামী শনিবারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা করছে, যেহেতু শুক্রবার দেশটিতে একটি সরকারি ছুটিও রয়েছে।
৪৩ বছর বয়সী রোমের শিক্ষক পাসকোয়ালে অ্যাপোলিতো বলেন, ‘সকালে ভেতর থেকে একটা টান অনুভব করলাম যে, আমাকে আসতেই হবে।’
ফ্রান্সিসের নিজ দেশ আর্জেন্টিনা সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। ইতালি পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।