পেহেলগামে হামলা ভারতের আত্মার ওপরে আঘাত : নরেন্দ্র মোদি

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন কাশ্মীরির মৃত্যুর পর কঠোর বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, “ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের মদতদাতাদের চিহ্নিত করবে, খুঁজে বের করবে এবং শাস্তি দেবে। ভারতের মনোবল কখনও ভাঙা যাবে না।” খবর এনডিটিভির।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিহারের মধুবনিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমেই নিহতদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “পেহেলগামে যেভাবে নিরীহ পর্যটকদের হত্যা করা হয়েছে, তা গোটা দেশকে ব্যথিত করেছে। কেউ তার ছেলে হারিয়েছে, কেউ ভাই, কেউ জীবনসঙ্গী। কেউ বলছিলেন বাংলা, কেউ কানাড়া, কেউ মারাঠি, কেউ ওড়িয়া, কেউ গুজরাটি।”
ভারতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কারগিল থেকে কন্যাকুমারী—দেশজুড়ে শোক আর ক্ষোভ। এটা শুধু নিরীহ পর্যটকদের ওপর আক্রমণ নয়, এটা ভারতের আত্মার ওপরে আঘাত।”
দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তারা এমন শাস্তি পাবে যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। সময় এসেছে সন্ত্রাসের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলার। ১৪০ কোটির শক্তিশালী ইচ্ছাশক্তি এই সন্ত্রাসের গডফাদারদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।”
বিশ্ববাসীকে উদ্দেশ্য করে ইংরেজিতে তিনি বলেন,“ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসবাদী ও তাদের মদতদাতাদের চিহ্নিত করবে, খুঁজে বের করবে এবং উপযুক্ত শাস্তি দেবে। আমরা তাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাড়া করব। সন্ত্রাসবাদ কখনও ভারতের মনোবল ভাঙতে পারবে না। সন্ত্রাসবাদ কোনোমতেই শাস্তি ছাড়া পার পাবে না।”

তিনি আরও জানান, যেকোনো মূল্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে এবং গোটা দেশ এই সংকল্পে একজোট।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরেই দেশে ফেরেন। এরপর তিনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, যেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী:
- ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত রাখা হয়েছে।
- আটারিতে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বন্ধ করা হয়েছে।
- সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিমের অধীনে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে 'পার্সোনা নন গ্রাটা' ঘোষণা করা হয়েছে।
- হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হবে ১ মে’র মধ্যে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। যারা এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে, তাদেরও চরম জবাব দেওয়া হবে।”