কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, বেড়েছে মুরগির দাম
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/10/15/bajar.jpg)
হঠাৎ বাজারে পেঁয়াজের কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এ অবস্থার প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ক্রেতা ও বিক্রেতা। ঘটনা গত সপ্তাহের। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। তবে কেজিপ্রতি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে দরদামের এ চিত্র। তবে এ দুটি পণ্যের দাম বাড়লেও অধিকাংশ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কেজিপ্রতি পেঁয়াজে ১০ টাকা করে কমেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আজ শুক্রবারও পেঁয়াজের কমা দাম অব্যাহত রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর খবরে কমেছে পেঁয়াজের দাম। শুল্ক না কমানো হলে এ দাম বাড়তির দিকে যেত বলে তাদের ধারণা ছিল। এখন দাম কমেছে। ফলে বিক্রিও বেড়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আব্দুর সবুর নামের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পহেলা অক্টোবর পেঁয়াজ বিক্রি করেছি কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা। ৮ আক্টোবর শুক্রবার সেই পেঁয়াজ কেজিপ্রতি পাইকারি কিনেছিলাম ৬৫ টাকা দরে। বিক্রি করছিলাম ৭০ টাকা। আজ কিনেছি ৫৫ টাকা কেজি দরে। বিক্রি করছি ৬০ টাকা করে।’
গত শুক্রবার আব্দুর সবুর বলেছিলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। তবে, বিক্রি কমে গেছে। আগে যাঁরা এক কেজি কিনতেন, তাঁরা এখন ৫০০ গ্রাম কিনছেন।’ তবে আজ তিনি বলেন, ‘এখন আবার বিক্রি বেড়েছে।’
সবুরের পাশে থাকা ব্যবসায়ীর দাবি, ‘পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা বিক্রি করছি। আমার মনে হচ্ছে, এখন আর দাম বাড়বে না। বরং আরও কমতে পারে। শুল্ক কমিয়ে দেওয়ার ফলে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।’
তবে মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিয়মিত বাড়তে থাকা ব্রয়লার মুরগির দাম নতুন করে কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ দাম বেড়েছে। এখন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে।
আজ শুক্রবার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। আর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।
ব্রয়লার মুরগির মতো পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও দফায় দফায় বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম কয়েক দফা বেড়ে এখন ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এই মুরগির কেজি ছিল ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা এবং দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি।
মুরগি ব্যবসয়ী হায়দার আলী বলেন, ‘গত শুক্রবারও ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৭৫ বিক্রি করেছি। যা আজ ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। এখন বিক্রি করছি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে।’
শফিক ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘গত শুক্রবার পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৭০ টাকা কেজি দরে। আজ কিনেছি ৬০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে বেশি করে পেঁয়াজ কিনতে চেয়েছিলাম, ভাগ্যিস কিনিনি। দাম কমে যাওয়াতে ভালো লাগছে। তবে পাকিস্তানি মুরগি নিয়ে যেতে বলেছে আমার স্ত্রী কিন্তু দাম সাড়ে ৩৫০ টাকা কেজি। ফলে ব্রয়লার কিনলাম। কিন্তু ব্রয়লারের দামও বেড়েছে।’
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর ও টমেটো। ভালো-মন্দ ভেদে কেজিপ্রতি গাজর ১০০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই সবজি দুটির দাম বাড়েনি। শীতের আগাম সবজি শিম গত সপ্তাহের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মূলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ সবজিগুলোর দামও বাড়েনি সপ্তাহের ব্যবধানে।