করোনায় মোংলা বন্দরের রেকর্ড
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস যখন বিশ্ব অর্থনীতিতে লাগাম টেনে ধরছে, ঠিক তার উল্টো চিত্র মোংলা বন্দরের। এই বন্দরে কর্মমুখর প্রাণচাঞ্চল্যে একটুও ভাটা পড়েনি। দেশের এ সমুদ্র বন্দরে জাহাজের আগমন সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি অর্থনীতির চাকাও ঘুরছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গড়েছে নতুন রেকর্ড। করোনার ধাক্কায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটি এক মূহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বন্দরে জাহাজ এসেছিল ৯১২টি। করোনার শুরুর বছর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৯০৩টি জাহাজ আসে। আর ২০২০-২১ অর্থ বছরের ৩১ মে পর্যন্ত জাহাজ আসে ৯১৩টি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মুসা জানান, ১৯৫০ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর ২০২০-২১ অর্থ বছরের জাহাজের সংখায় নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। যা কোনো বছরেই এত জাহাজের সংখ্যা হয়নি। করোনার ধাক্কা সামলিয়ে এ বন্দরের অর্থনৈতিক চাকা সচল রেখেছেন তারা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব মাকরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থ বছরের ৯১২টি জাহাজ থেকে মোংলা বন্দরের আয় হয়েছে ৩২৯ কোটি ১২ লাখ এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ৯০৩টি জাহাজ থেকে আয় হয়েছে ৩৩৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থ বছরের ৩১ মে পর্যন্ত ৯১৩টি জাহাজ এলেও এর অর্থের হিসাব হবে আগামী ৩০ জুন।’
তবে চলতি অর্থ বছরে জাহাজ আগমনের সংখ্যা গেল দুই বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় আয়ও বেশি হবে বলে জানান তিনি।
উপসচিব আরও বলেন, ‘করোনার কোনো প্রভাই পড়েনি দেশের এই সমুদ্র বন্দরে। সারা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আংশিক স্থবির থাকলেও মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। ২৪ ঘণ্টাই চলমান ছিল এ বন্দরের কার্যক্রম।’
মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মুসা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে সতর্কতা হিসেবে মোংলা বন্দরে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শণার্থী প্রবেশ সীমিতকরণ, অফিসে প্রবেশের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা পরীক্ষা, বন্দরের অফিসসমূহে এবং বন্দর এলাকায় করোনার সতর্কীকরণমূলক চলাফেরা করার নির্দেশনা রয়েছে।’
বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘করোনার মধ্যেও বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখতে মোংলা বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, ব্যাংক, শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্টিভিডর্স ও অন্য বন্দর ব্যবহারকারীর সমন্বয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী আলহাজ হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল বলেন, ‘করোনাকালীন বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বন্দরে আসা দেশি-বিদেশি জাহাজ থেকে আমরা পণ্য খালাস ও বোঝাই করেছি। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি পালনে শতভাগ সতর্ক ছিলাম।’