ক্রেতাশূন্য মোকাম, ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক-ব্যবসায়ী
করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের গণপরিবহণ বন্ধ। তাই ক্রেতাশূন্য মোকাম। আর হাওরাঞ্চল থেকে আসা চলতি মৌসুমের নতুন বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার মোকামের ব্যবসায়ীরা। মৌসুমের শুরুতে আধা-পাকা ও ভেজা এইসব ধান দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কৃষকদের।
ভৈরব বাজারের আড়তদার আব্দুল্লাহ মিয়া, তোফাজ্জল হোসেন ও নজরুল ইসলাম খান জানান, নদীপথে দেশের পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকা সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান আসছে ভৈরব নদীবন্দরের মোকামে। প্রতি বছরই আসে ওইসব অঞ্চলের ধান।
পরে ভৈরবের মোকাম থেকে বিক্রি হয় ঢাকাসহ চাঁদপুর, কুমিল্লা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের আড়তসহ মিলগুলোতে। সেসব এলাকার পাইকাররা (ব্যবসায়ী) এসে এখান থেকে এসব ধান কিনে নিয়ে যান।
কিন্তু বর্তমান করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের নদী ও সড়কপথে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা আসতে পারছেন না। এজন্য ধান নিয়ে এখানকার আড়তদাররা পড়েছেন বিপাকে। মৌসুমের প্রথম ধাপের আধাপাকা ও ভেজা ধান সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে লোকসানের মুখে পড়বেন কৃষকসহ এখানকার ব্যবসায়ীরা।
প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান মোকামে আসায় তাদের নিজস্ব গুদামগুলি পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এরইমধ্যে। তাই বর্তমানে আমদানি হওয়া ধান নদীর তীরেই জাঁক দিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। ফলে ঝড়-বৃষ্টিতে এইসব ধান নষ্ট হয়ে কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা বড় রকমের লোকসানে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এসব বিষয় উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধানের ক্রেতারা ভৈরবে আসতে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থা দাবি করেন। অন্যথায় ধানের লোকসানে কৃষক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সবাই ক্ষতির মুখে পড়বেন বলেও জানান তাঁরা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা জানান, কৃষিপণ্য আনা নেওয়া বর্তমান সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আইনের আওতামুক্ত। সুতরাং ধান আনা নেওয়ায় সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে ধানের ক্রেতাদের জন্য ‘বিশেষ যাতায়াত ব্যবস্থা’ তাঁর এখতিয়ারের বাইরে।