২০২১ সাল পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ভ্যাট’ চায় ডিসিসিআই
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সুবিধা বিবেচনায় আগামী পাঁচ বছর, অর্থাৎ ২০২১ সাল পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ভ্যাট’ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে গতকাল রোববার বিকেলে আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ এ প্রস্তাব দেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘দেশজ মোট উৎপাদনে (জিডিপি) অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) অবদান রাখে ৩০ শতাংশের বেশি। দেশের বেসরকারি খাতের ৭৫ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থানের জোগান দেয় এ খাত। আগামী বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সুবিধা বিবেচনায় ২০২১ সাল পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।’
হোসেন খালেদ বলেন, ‘আসন্ন বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি। মহিলা করদাতা ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা এবং প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।’
আয়কর আরোপের ক্ষেত্রে আয়ের প্রথম চার লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ও এর বাইরে বাকি আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই।
আগামী জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে। নতুন আইনে কোনো প্যাকেজ পদ্ধতির ভ্যাট থাকছে না। সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য হবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্যাকেজ ভ্যাট ২০২১ পর্যন্ত নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন ডিসিসিআই নেতারা। এর মধ্যে আগামী বাজেটে প্রতিষ্ঠানপ্রতি ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার, অন্যান্য সিটির জন্য ১০ থেকে বৃদ্ধি করে ১২ হাজার, পৌর এলাকায় সাত হাজার ২০০ থেকে আট হাজার এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় তিন হাজার ৬০০ থেকে বৃদ্ধি করে চার হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।
ডিসিসিআইর নেতাদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, এবারের বাজেট হবে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগবান্ধব। ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করেই এবারের বাজেট প্রস্তাব করা হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির প্রস্তাব ও সুপারিশগুলো বিবেচনায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এনবিআরের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, পারভেজ ইকবাল, ফিরোজ শাহ আলম, তন্দ্রা সিকদারসহ ডিসিসিআই ও এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।