বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা দ্রুত বাড়বে : এডিবি
বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশ। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত সর্বশেষ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দ্রুত সামান্য প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির পূর্বাভাস সম্পর্কে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং ইউরো এলাকায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে ভালো রপ্তানি প্রবৃদ্ধি উন্নতিকে প্রতিফলিত হবে। মুদ্রাস্ফীতি ২০২৩এ ৯ শতাংশ থেকে ২০২৪এ ৬ দশমিক ৬ শতাংশে হ্রাস পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি হিসেবে ঘাটতি কিছুটা সংকুচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক চাহিদা প্রত্যাশার চেয়ে কম হলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির আরও অবনতি অনুমেয়, যা প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রধান ঝুঁকি।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেন, ‘সরকার বাহ্যিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তুলনামূলক ভালোভাবে মোকাবিলা করছে। একইসঙ্গে তারা বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও কাঠামোগত সংস্কারের অগ্রগতি করছে।’
গিনটিং বলেন, ‘মূল কাঠামোগত সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে—জনসাধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা, দেশীয় সম্পদের সুষম বণ্টন বৃদ্ধি করা, সরবরাহের উন্নতি করা এবং আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা, যা বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং মধ্যমেয়াদে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
গিনটিং আরও বলেন, ‘তেলের মূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতি অভ্যন্তরীণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ সম্প্রসারণ এবং দেশের জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংস্কারগুলোকে ত্বরান্বিত করার জন্য একটি ভালো প্রণোদনা প্রদান করে।’
এডিবির ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তথ্যে বলা হয়েছে, মাঝারি মূল্যস্ফীতি ও রেমিট্যান্সের বৃদ্ধি দেশীয় খরচ পুনরুদ্ধারে অবদান রাখবে। এছাড়া, বেশ কয়েকটি বড় সরকারি অবকাঠামো প্রকল্পের সমাপ্তির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াবে। তবে, দেশের মুদ্রানীতি কাঠামোর উন্নতির পর প্রাথমিক উচ্চ সুদের হারের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ হ্রাস পেতে পারে। বৈশ্বিক অ-জ্বালানি পণ্যের দামের কিছুটা পতন, প্রত্যাশিত উচ্চতর কৃষি উৎপাদন এবং নতুন কাঠামোর অধীনে আর্থিক নীতির প্রাথমিক কঠোরকরণ এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ বছরের অংশীদারত্বে রয়েছে এডিবি। বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবকাঠামো, জনসেবা ও সামাজিক উন্নয়নে সহ-অর্থায়নসহ ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ ও অনুদান সরবরাহ করেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশে এডিবির বর্তমান সার্বভৌম পোর্টফোলিওতে প্রায় ১৩ বিলিয়ন মূল্যের ৫৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।
এডিবি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।