এলটিইউর চট্টগ্রাম শাখা বিলুপ্ত
বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) আয়করের চট্টগ্রাম শাখার কার্যক্রম স্থগিত বা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এলটিইউর চট্টগ্রাম শাখায় থাকা কর নথিগুলো (করদাতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলের অধিক্ষেত্রে বণ্টন করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এলটিইউর চট্টগ্রামের এ শাখা বিলুপ্ত ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে।
সম্প্রতি এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদের সই করা এ সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করা হয়েছে। এলটিইউর ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম শাখার বিলুপ্ত করতে গত ২৮ অক্টোবর এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর এলটিইউর চট্টগ্রাম শাখা বিলুপ্ত করা হয়। এলটিইউর চট্টগ্রাম শাখায় প্রায় ১৩৫টি কর নথি রয়েছে (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান)।
এনবিআরের আদেশে বলা হয়, কর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাজ্য সরকারের ডিএফআইডির (ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপার্টমেন্ট) রিরা (রিফর্মস ইন রেভিনিউ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) আওতায় এনবিআরের অধীনে এলটিইউ গঠিত হয়। পরে রাজস্ব আহরণের গতি ত্বরান্বিত করতে ট্যাক্টস (ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ক্যাপাসিটি অ্যান্ড ট্যাক্সপেয়ার সার্ভিস) প্রজেক্টের আওতায় ২০১১ সালে এলটিইউ, ঢাকার অধীনে চট্টগ্রামে একটি শাখা চালুর মাধ্যমে চট্টগ্রামে এলটিইউর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। যা এলটিইউ (চট্টগ্রাম শাখা) নামে পরিচিত। বর্তমানে একজন কর কমিশনারের অধীনে এনবিআরের নির্ধারিত অধিক্ষেত্র অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রামে এলটিইউর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অপরদিকে, এলটিইউর প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এলটিইউর বিগত বছরগুলোর মোট লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চট্টগ্রাম শাখায় আহরিত রাজস্বের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য নয়। এলটিইউর মোট নথির তুলনায় চট্টগ্রাম শাখার নথির সংখ্যাও নগণ্য। নথি সংখ্যা ও রাজস্ব আহরণের বিবেচনায় এলটিইউ চট্টগ্রাম শাখার কার্যক্রম পরিচালনা করতে অফিস ভবন ভাড়াসহ বিপুল পরিমাণে প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহ করতে হচ্ছে। এছাড়া এলটিইউর কর কমিশনার, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও যুগ্ম কর কমিশনার ঢাকাস্থ কার্যালয়ে অবস্থান করেন। দূরত্বের কারণে এই শাখার রাজস্ব আহরণ ও উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত কার্যক্রমের সুষ্ঠু মনিটরিংসহ গুণগতমান নিশ্চিত করা কঠিন।
আদেশে আরও বলা হয়, এলটিইউর চট্টগ্রাম শাখার কার্যক্রম পরিচালনার উপযোগিতার বিষয়টি বিবেচনায় বৃহৎ করদাতা ইউনিটের চট্টগ্রাম শাখার কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। এলটিইউর চট্টগ্রামে ন্যস্তকৃত আয়কর নথিসমূহ চট্টগ্রামস্থ চারটি কর অঞ্চলে অধিক্ষেত্র অনুযায়ী বণ্টন করার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
জানা যায়, এনবিআরের আয়কর লক্ষ্যমাত্রার সিংহ ভাগই যোগান দেয় এলটিইউ। উৎসে আয়করের বেশিরভাগ জোগান দেয় এলটিইউ। এলটিইউতে মোট করদাতার সংখ্যা এক হাজার ১৫৯। এর মধ্যে কোম্পানি করদাতা ৪৩৯। কোম্পানি করদাতার মধ্যে ৬২টি ব্যাংক, পাঁচটি মোবাইলফোন কোম্পানি, ৩৯টি লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি, ৪৭টি মার্চেন্ট ব্যাংক, ৪৮টি সাধারণ বিমা, ৩২টি জীবন বিমা, ১২টি ফার্মাসিউটিক্যালস, পাঁচটি টোব্যাকো ম্যানুফ্যাকচারিং, ২৭টি টেক্সটাইলস, ১৪টি গার্মেন্ট, ৯টি মাল্টিপল প্রোডাক্টস, ৭৪টি ম্যানুফ্যাকচারিং, ৬৫টি অন্যান্য কোম্পানি। আর ব্যক্তি করদাতা ৭২০। যার মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানির পরিচালক।