ক্রেতা আকর্ষণে মেলায় ফার্নিচারের দোকানে ছাড়ের ছড়াছড়ি
বাণিজ্য মেলায় গতকাল শুক্রবারের চেয়ে আজ শনিবার ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আনাগোনা বেড়েছে। যদিও আজ মেলার শুরুতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের তেমন সমাগম ছিল না। তবে বেলার বাড়ার পর দেখা গেল তার বিপরীত চিত্র। বিকেলের পর মেলার প্রাঙ্গণে মানুষের ঢল নামে। তবে পুরো মেলা জুড়ে ক্রেতা আকর্ষণে ছিল ছাড়ের ছড়াছড়ি। ফলে ক্রেতারাও ঘুরছে পছন্দ মতো প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোতে।
গত বুধবার থেকে মেলাটি হচ্ছে রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে। মাসব্যাপী এ বাণিজ্যমেলার আজ চতুর্থ দিন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে মেলায় মানুষ কম আসছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, মেলার শুরু হয়েছে গত বুধবার। সেই দিন ক্রেতা ছিল না বললেই চলে। এখন সেই কমার দৃশ্য পালটে যাচ্ছে। মেলায় মানুষের সমাগম বাড়ছে। তবে এটাও প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম।
তারা বলেন, কেবল জানুয়ারি মাস শুরু। এখনও অনেকে বেতন পায়নি। কারণ অনেক অফিস দেরিতে বেতন দেয়। হয়ত এ কারণে অনেকেই মেলায় আসছে না। আশা করছি, সামনে মেলায় মানুষের সংখ্যা বাড়বে।
শনিবার মেলায় ব্রাদার্স, নাভানা, জেএমজিসহ সাত ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নগুলো ঘুরে দেখা যায়, বেশ আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়েছে প্যাভিলিয়নগুলো। সব প্যাভিলিয়নের অধিকাংশ আসবাবপত্র নতুন ডিজাইনের দাবি ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের। তারা বলেন, এবারের মেলায় রয়েছে বিশেষ ছাড়। সঙ্গে ফ্রি ডেলিভারি। এছাড়া অন্যান্য সুবিধাও আছে।
গতকাল শুক্রবার ক্রেতা কম ছিল জানিয়ে হাতিল ফার্নিচারের সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আজ মেলায় ক্রেতা বেড়েছে। সকালের কম থাকলে বিকেলে পর বেড়েছে। এবারের মেলায় ৯০ শতাংশই নতুন ডিজাইনের হাতিল ফার্নিচার। প্রতিটি আসবাবপত্র কেনাতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
আজ ক্রেতা অন্য তিনদিনের চেয়ে বেশি জানিয়ে হাতিম ফার্নিচারের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, এবারে মেলায় শতভাগ নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার প্রদর্শন হয়েছে। প্রতিটি পণ্য কেনাতে ছাড় দিচ্ছি সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ।
প্রতিটি পণ্য ফ্রি হোমডেলিভারি জানিয়ে লিগ্যাল ফার্নিচারের বিক্রয়কর্মী আকিব আকন বলেন, প্রতিটি পণ্য কেনাতে ছাড় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
গতবারের চেয়ে এবারে মেলার আসার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হয়েছে জানিয়ে নাদিয়া ফার্নিচারের বিক্রয়কর্মী মারুফ হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত তিনদিন ক্রেতা কম ছিল। তবে আজ ক্রেতার আনাগোনা বাড়ছে। এবারের মেলায় ৯০ শতাংশই নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার উঠানো হয়েছে।
এদিকে মেলায় অন্যসব গরম কাপড়, জুতাসহ হরেক রকমের স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরা বলেন, এবারে ঠান্ডা কিছুটা বেশি। অন্য বছরের মতো এখনো মেলা জমেনি। তবে প্রায় সব স্টলে রয়েছে বিশেষ ছাড়। আশা করছি, এই সপ্তাহের শেষ দিকে মেলা জমবে।
মেলায় অংশ নেওয়া বিদেশি স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরা বলেন, অন্য বছর শুক্রবারে মেলায় অনেক ক্রেতা পাওয়া যেত। তবে গত শুক্রবার পুরোটাই ব্যতিক্রম। হয়ত শীতের কারণে এমন হয়েছে। তবে আজ শনিবার মানুষের ভিড় রয়েছে। তবে কেনাকাটা কম।
বাংলাদেশ ছাড়াও সাত দেশের মোট ১১ প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া। এবারের বাণিজ্যমেলা সাজানো হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান থিমে। এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ চত্বর ও নামাজ ঘর রয়েছে।