ক্যাম্পাসে ভিসি কলিমউল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সে সময় তিনি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দোষারোপ করেন। এর প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের একাংশ এই সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ করেছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটিও উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
দুপুরে বেরোবির উপাচার্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে।’
এরপরই বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্যের বক্তব্যকে ‘শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনকই নয়, নিতান্তই রুচিবিবর্জিত’ বলে মন্তব্য করা হয়। এতে বলা হয়, ‘উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত কয়েকটি অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে।’
এর মধ্যে ক্যাম্পাসে পাল্টা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। এতে বলা হয়, ঢাকায় বসে মিথ্যাচার, শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে বেরোবি শাখা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, ‘উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ভিসি হয়েও অনুপস্থিতি থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমতো পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক পদ দখল, ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন, উপাচার্যের অননুমোদিত ও অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেনিং, ঢাকাস্থ লিয়াঁজো অফিসে অতিরিক্ত খরচসহ নানান অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িত।’
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উপাচার্য সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন। এমনকি ইউজিসি বিষয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। সরকারের উন্নয়নসহ সবকিছুর বিষয়েই তিনি বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। অতিসত্বর এসব মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব আমরা।’
এ সময় উপাচার্যকে প্রত্যাহারের দাবি জানান মশিউর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি এইচ এম তরিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড আব্দুল লতিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।