জাবির হলগুলোতে নোটিশ ‘সিট দেওয়া সম্ভব নয়’
দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র আবাসন সংকট। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ দিলেও বেশিরভাগ হলেই মিলছে না সিট। হলের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়েছে ‘সিট দেওয়া সম্ভব নয়’। এতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বেগম খালেদা জিয়া হলের কর্মচারি রুবেল হোসেন জানান, ‘হলে কোনো সিট খালি নেই। গণরুমও খালি হয়নি। প্রভোস্ট ম্যাম আমাদের বলেছে কাউকে সিট দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমাদের সবার তথ্য নিতে বলেছেন। আমরা একটা ফরমে সবার তথ্য নিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক বশির আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘হলে সিটের ব্যবস্থা নেই। আমরা নোটিশে জানিয়ে দিয়েছি। গণরুমগুলোতেও শিক্ষার্থী রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশপাশের রোডে বাসের সুবিধা দিবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে বিভিন্ন কোয়ার্টারে ১৫০টির মতো সিটের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এই মুহূর্তে কোনো সিটের ব্যবস্থা করা যাবে না।’
সিট সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট বলেন, ‘অনেক বিভাগে সেশন জট। পড়াশুনা শেষ করতে পাঁচ, ছয় এমনকি সাত বছরও লেগে যাচ্ছে।’
বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক হোসনে আরা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার হলে সিট ফাঁকা হওয়ার সম্ভাবনা আছে চারটি। কিন্তু সেখানে এলোট দেওয়া হয়েছে ১২৭ জন। গত বছরও সিটের চেয়ে ৯০ জনকে বেশি এলোট দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমার তো কিছু করার নেই। প্রশাসনকে হলে এলোট দিতে নিষেধ করেছি। তারপরও এলোট দিয়েছে। প্রশাসনকে জানানোর পর নোটিশ দিতে বলেছে। আমরা নোটিশ দিয়েছি। এখন প্রশাসন কোনো সমাধান দিতে পারলে সমাধান হবে। আমরা আমাদের জায়গায় চেষ্টা করছি।’
মীর মশাররফ হোসেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘হলে কোনো সিট ফাঁকা নেই। এমনকি গণরুমগুলোও ভর্তি। আমরা নোটিশ দিয়েছি। সাময়িক সময়ের জন্য সবাইকে আশপাশের কোথাও অবস্থান করার জন্য। প্রশাসন বাসের ব্যবস্থা রেখেছে। আমরা সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজকে কয়েকবার ফোন দিলেও মিটিংয়ে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, মীর মশাররফ হোসেন হল, বেগম খালেদা জিয়া হল, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল, প্রীতিলতা হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলসহ কয়েকটি হলে তীব্র সিট সংকট থাকায় কোনো শিক্ষার্থীকেই সিট দিতে পারছে না। গত বছরও ছাত্রীদের সিটের দাবিতে আন্দোলন করতে দেখা যায়। সিট সংকট এখন তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। আগামীকাল থেকে প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরু হবে।