তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত
রাজশাহী, ইসলামী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আজ সোমবার তিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে আজ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা আগামী ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা শুরু ও ১৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব খোলার পর বিসিএস পরীক্ষা নেওয়া হবে।’
বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদনের তারিখ ও পরীক্ষার তারিখ পেছানো হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের তারিখে যেসব শিক্ষার্থীর বয়সসীমা অতিক্রান্ত হয়ে যাবে তাদের বিষয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে। কেউই যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আমরা অবশ্যই সেদিকে খেয়াল রাখব।’
আজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলমান সব পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
সন্ধ্যায় রাবির জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড. আজিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলে তো আমাদের কিছুই করার থাকে না। উপাচার্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত থাকবে।’
এর আগে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম।
নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ থেকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরে গত জুলাই থেকে অনলাইন, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিকল্প শিক্ষাদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, কওমি মাদ্রাসা ছাড়া অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। তবে কওমি মাদ্রাসাগুলো আরো আগেই খুলে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবাসিক হল বন্ধ রেখে চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়াও শুরু হয়। কিন্তু হল খোলার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, ইসলামী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সোমবার বলেন, ‘এক শ্রেণির মানুষ বর্তমান সরকারকে নানাভাবে ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে তাদের মতাদর্শের কিছু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ থাকা আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে উসকে দেওয়া হচ্ছে।’
এ সময় দীপু মনি যেসব শিক্ষার্থী হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেছে তাদের অবিলম্বে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। হল ত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন তিনি।