রাবিতে সভাপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, আদালতের স্থগিতাদেশ
জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে সভাপতি নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ভার্চুয়াল আদালতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
এর আগে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নিয়োগ স্থগিত চেয়ে ভার্চুয়াল কোর্টে রিট পিটিশন করেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক মু. আলী আসগর। তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আমিনুল হক হেলাল।
জানা যায়, অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে ২০১৭ সালের ৯ মে তিন বছরের জন্য ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, যার মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৮ মে।
অধ্যাপক আলী আসগরের দাবি, জ্যেষ্ঠতার নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের পর তাঁর সভাপতি হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কনিষ্ঠ শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩-এর ২৯ ধারার (৩) (১) জ্যেষ্ঠতার নিয়ম লঙ্ঘন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ১৯৭৩-এর প্রখম স্ট্যাটিউটর ৩(১) ধারা মোতাবেক, ‘প্রতিটি বিভাগের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কর্তৃক বিভাগের শিক্ষকদের মধ্য থেকে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে তিন বছর মেয়াদের জন্য নিযুক্ত হবেন। তবে সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার নিচের কোনো শিক্ষক সভাপতি হতে পারবেন না।’
‘তবে জেষ্ঠ্যতা বলতে র্যাংক এবং স্ট্যাটাসের (পদমর্যাদার) জেষ্ঠ্যতা বোঝাবে; কিন্তু বয়স কিংবা চাকরির মেয়াদের জ্যেষ্ঠতা বোঝাবে না। তবে দুজন শিক্ষকের র্যাংক এবং স্ট্যাটাস (পদমর্যাদা) সমান হলে তাদের মধ্যে যার চাকরির মেয়াদ বেশি, তিনিই সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হবেন। এ ক্ষেত্রে বিভাগের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার (অধ্যাপক) শিক্ষকদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষককে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
অধ্যাপক ড. মু আলী আসগর বলেন, ‘বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির ইস্যুতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলাম। ওই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে রিট প্রত্যাহার করতে জোর করা হয়। কিন্তু আমি সিদ্ধান্তে অনড় থাকি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওই নিয়োগ হাইকোর্ট বাতিল ঘোষণা করেন। ওই ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। জেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে বিভাগের সভাপতি নিয়োগ এরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।’
আদালতের স্থগিতাদেশ বিষয়ে জানতে রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।