অবশেষে জাবিতে ভবন জটিলতার অবসান
দীর্ঘ তিন মাস পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন ভবনের বরাদ্দ নিয়ে তিন বিভাগের মধ্যে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (সিএসই), পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগকে ভবনের ৩৫ হাজার বর্গফুট করে জায়গা সমান করে ভাগ করে দেওয়া হয়। আর গতকাল রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম মাহবুবুল আমীন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল ইসলামের কাছে তাঁদের জন্য বরাদ্দকৃত স্থান ও কক্ষের চাবি হস্তান্তর করেন। তবে পরিবেশ বিজ্ঞানের কোনো শিক্ষক উপস্থিত না থাকায় বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত স্থান ও কক্ষের চাবি হস্তান্তর করা হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. খবির উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের স্থান সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করে দিয়েছে। আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’
জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘আলোচনার ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে উদ্ভূত সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সে বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।’
গত ৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের একটি অফিস আদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসংলগ্ন নতুন বিজ্ঞান ভবনের উত্তর ও দক্ষিণ ব্লকের তৃতীয় তলার ২৮ হাজার বর্গফুট পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে হস্তান্তরের কথা বলা হয়। এ আদেশ পেয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ওই ভবনে উঠতে যায়। কিন্তু ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেয়।
ভবনে উঠতে না পেরে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ তীব্র আন্দোলনও শুরু করে। এর পর ৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে। এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে ওই ভবনের তৃতীয় তলার ২৮ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেয়। এর প্রতিবাদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও ভূতাত্ত্বিক বিভাগের ২৫ শিক্ষক পদত্যাগ করেন এবং শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
১৪ মে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে নতুন বিজ্ঞান ভবনের তালা ভেঙে তৃতীয় তলায় আসবাব তুলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ। ওই দিন তিন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই ভবন সিলগালা করে দেয়।