ছাত্রলীগের সেই এশার গলায় এবার ফুলের মালা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের এক ছাত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন সাধারণ ছাত্রীরা। সেই এশার গলায় একাধিক ফুলের মালা দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জয়দেব নন্দী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান তারেক এবং শামসুল কবির রাহাত, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি ওমর শরীফসহ আরো অনেকে।
ওই ছবির উপরে ক্যাপশনে মেহেদী হাসান লিখেন, ‘আমরা সাবেক ছাত্রলীগ....এশার পাশে...।’
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় হলের এক সাধারণ ছাত্রীকে রুমে ডেকে নিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে এশার বিরুদ্ধে। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, পায়ের রগ কেটে ওই শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত করা হয়। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে এশাকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তাঁর বিচার দাবি করে। একপর্যায়ে হলের প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটরদের সামনেই এশার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় হলের ছাত্রীরা। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে গুজব ছড়ানো হয়, এশা এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন। ওই ছবি দেখে হাজার হাজার ছাত্র রাতেই সুফিয়া কামাল হলের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে রাতেই এশাকে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন উপাচার্য আক্তারুজ্জামান।
এ ছাড়া সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
সুফিয়া কামাল হলের একাধিক ছাত্রীর অভিযোগ, ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি এশা এর আগেও সাধারণ ছাত্রীদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করতেন। তবে এত দিন ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি।
এদিকে সুফিয়া কামাল হলে সংগঠিত ঘটনা তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলে তারা। তবে এ তদন্ত কমিটি গঠনের পর সুফিয়া কামাল হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে এশাকে নির্দোষ প্রমাণ করা হতে পারে।