ঢাবির সিনেটে গেস্টরুমের সমালোচনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট অধিবেশনে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের ‘গেস্টরুম’ নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্যরা।
সিনেট সদস্য ও রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, রাতে পড়াশুনার সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলে গিয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এতে তাদের পড়াশুনার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট অধিবেশন পরবর্তী আলোচনা সভায় এ অভিযোগ করেন চন্দ্রনাথ পোদ্দার। ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কবি মুহাম্মাদ সামাদ, রেজিস্ট্রার এনামুজ্জামানসহ সিন্ডিকেট, ডিন ও সিনেট সদস্যরা।
অভিযোগ আছে, সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন হলের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা গেস্টরুমে (বিচারালয়) নেন। বিচারের নামে তাঁদের বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তাঁদের প্রতিদিন রাতে বিভিন্ন হলে পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে তাঁরা অন্যদের সাথে পরিচিত হন।
এই সমস্যার সমাধান চেয়েছেন চন্দ্রনাথ পোদ্দার। তিনি বলেন, এসব সমস্যার সমাধান করে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পরিবেশ নিশ্চিত করুন।
সিনেট সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা গণরুম কালচার। এটা ঢাবির পরিবেশের সঙ্গে মানায় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই গণরুমের ব্যবস্থা করেনি। অথচ শিক্ষার্থীরা গণরুমে থাকে কেন? এই কালচার বাতিল করতে হবে।
ছাত্রলীগের নেতারা প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়ার নামে এই গণরুম কালচার করেছেন বলে জানা যায়।
ঢাবির এই অধ্যাপক আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা আবর্জনা পড়ে আছে। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে। কয়েকদিন আগে উপাচার্য নিজের হাতে ঝাড়ু দিয়েছেন। এটা সবার জন্য অনুপ্রেরণা। যেখানে এই পরিবেশ বিরাজ করছে তা সমাধান করা উচিত।
আলোচনা সভায় সিনেট সদস্য পাপিয়া হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় ভাসমান দোকান গড়ে উঠেছে। যেখানে সেখানে চায়ের দোকান, ডাবের দোকান, পরোটার দোকান। এদের আশপাশে মাদক সেবন ও বিক্রি হয়। শুধু তাই নয় ক্যাম্পাসের যেখানে সেখানে বস্তি গড়ে উঠেছে। এগুলো দেখার কেউ নেই? শাহবাগ থানা, নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি কি করে? এগুলোর সমাধান হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের জটিলতা নিয়ে সমালোচনা করেন সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজিন আজিজ চৌধুরী। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যাপক দৌড়াদৌড়ি করে। এতে তারা নানান ঝামেলায় পড়ে। এর জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করা যেতে পারে।