ফেসবুকে স্ট্যাটাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী বহিষ্কার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রলীগ নিয়ে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়। বহিষ্কৃত ছাত্রীর নাম মৌসুমী মৌ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মৌসুমী নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘নিষিদ্ধ পল্লীতে বেলুন দুর্ঘটনায়…। ##Colleted##’
পরে, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তির নজরে আসে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন।
পরে ওই ছাত্রীর বিচার চেয়ে আজ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় শাখা ছাত্রলীগ। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।
রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ‘ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মৌসুমী মৌ তাঁর ফেসবুক আইডিতে ছাত্রলীগ সম্পর্কে কুৎসিত ও আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেওয়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং প্রগতিশীল আদর্শে লালিত সংগঠন ছাত্রলীগকে কেবল অসম্মানিত করেনি বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী সকলকে আহত করেছে। এ ঘটনায় মৌসুমীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। এ ছাড়া তাঁকে কেন চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’
এ ছাড়া ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আহসানুল-হক-আম্বিয়া ও সহকারী প্রক্টর এস এম আব্দুর রহিম।
তবে এ বিষয়ে মৌসুমী মৌ বলেন, ‘আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। বিষয়টি জানতে পেরে আইডি ডিঅ্যাকটিভেট করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগকে নিয়ে যে কটূক্তি করা হয়েছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে ইবি থানায় মামলা দায়ের করেছি আমি।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ জানান, মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিয়ে ফেসবুকে যে অশ্লীল, অসভ্য এবং কুৎসিত মন্তব্য করা হয়েছে তা অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে চরমভাবে আঘাত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে মৌসুমী মৌ প্রশাসনের কাছে নিজ বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করলে ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।