ঢাবিতে হলকক্ষের ‘নিয়ন্ত্রণ নিতে’ ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একটি কক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতারা জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে। তবে, এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
হলের প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ছাত্র বলেন, গতকাল মধ্যরাতে সূর্যসেন হলের ২০৭ নম্বর কক্ষটি নিয়ে দুইপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কক্ষটি এতদিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হকের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের হল শাখার অনুসারীরা তাঁদের ওঠানোর চেষ্টা করলে, এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
পরে সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীরা হলের অতিথিকক্ষে আর রেজওয়ানুল হকের অনুসারীরা দোকানের সামনে জড়ো হন। জড়ো হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুইপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে পরস্পরের ওপর চড়াও হন। আধা ঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে। পরে রেজওয়ানুল হক ও সাদ্দাম হোসেনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, সূর্যসেন হলে সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীরা হল শাখা ছাত্রলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপসম্পাদক সিয়াম রহমান এবং রেজওয়ানুল হকের অনুসারীরা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খ. ম. মুহতাসিম মাহমুদ হাসিবের সঙ্গে রাজনীতি করেন। এই দুই পক্ষের মধ্যেই গতকাল রাতে কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমিও ছিলাম। ঘটনা তদন্তে হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ বাহাউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। যারা বিবাদে লিপ্ত হয়েছিল, তাদের ডেকে নিয়ে তাদের বক্তব্য শুনছি। কমিটি আজ প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদন দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
তবে, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সূর্যসেন হলে মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের একটা সংঘবদ্ধ অশুভ চক্র আছে। তাঁরা হলের পরিবেশ অশান্ত করার জন্য রুম দখলের পাঁয়তারা করছিল। হল শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে।’ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।