ছাত্রলীগের কারণে মতবিনিময় করতে পারল না স্বতন্ত্র পরিষদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলে মতবিনিময় সভা করতে পারেনি হলের সাধারণ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র পরিষদ। তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কারণে তারা সভা করতে পারেনি। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুয়েত মৈত্রী হলে এই ঘটনা ঘটে।
হল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মতবিনিময় সভা করতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইলা ইসমাইলের কাছ থেকে অনুমতি নেন স্বতন্ত্র পরিষদের ভিপি প্রার্থী নুরুন্নাহার পলি। কিন্তু ছাত্রলীগ মনোনীত হল সংসদের প্যানেলের প্রার্থীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে হলের টিভি রুমে প্রজেকশন মিটিং করে।
সন্ধ্যা ৭টায় তাদের সময় শেষ হলেও তারা টিভি রুম ছেড়ে যায়নি। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র পরিষদের প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালে তিনি ছাত্রলীগের প্রার্থীদের অবহিত করেন। তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা টিভি রুম ছাড়েননি।
এই বিষয়ে হলের ভিপি প্রার্থী নুরুন্নাহার পলি বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র পরিষদ প্যানেল আগের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে পরিচিতি সভা করতে লিখিত অনুমতি নিই। কিন্তু সভা করতে গিয়ে দেখি সেখানে ছাত্রলীগের প্যানেলের সভা চলছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালে তিনি আমাদের ছাড়া আর কাউকে অনুমতি দেননি বলে জানান। এটা স্পষ্ট আচরণবিধির লঙ্ঘন।’
ওই প্যানেল সমর্থিত ডাকসুর স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের জিএস প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে আমাদের প্রজেকশন মিটিংয়ের জন্য অনুমতি নেওয়া ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে জানতে পারি কোনো ধরনের পূর্বানুমতি ছাড়াই একটি গোষ্ঠী আমাদের সভাস্থল দখল করে আছে। দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে, প্রশাসনকে বারবার বলেও আমরা মিটিং করতে পারিনি। এ ধরনের দখলদারত্ব যুগ যুগ ধরে চলমান। এর বিরুদ্ধে একমাত্র ব্যালটই পারে জবাব দিতে। ১১ তারিখ শিক্ষার্থীদের পক্ষের শক্তির সঙ্গে থাকুন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এই বিষয়ে জানতে কুয়েত মৈত্রী হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইলা ইসমাইলকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ডাকসুর সদস্যপ্রার্থী ফরিদা পারভীন বলেন, ‘আমরাও হল প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে সভা করেছি।’ অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি তিনি এই প্রতিবেদককে হল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে শোনার জন্য বলেন।
উল্লেখ্য, ডাকসু গঠনতন্ত্রের পাঁচ নম্বর ধারার (ঞ) তে আছে ‘কোনো সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা বা নির্বাচনী প্রচার কাজে বাধাদানকারী বা গোলযোগ সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে রিটার্নিং অফিসার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।