অনিয়মের প্রতিবাদে ভোট দেননি ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদগুলোর নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বিরত রয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের সহযোগিতায় একটি বানোয়াট নির্বাচন হচ্ছে। ছাত্রলীগের পক্ষে যা করা দরকার, সবই তারা করছে। এ কারণে এর প্রতিবাদে এখনো ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছি। দুপুরের মধ্যে সব হলের প্রার্থীদের নিয়ে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব ভোট বর্জন করব কি না।’
ছাত্রদলের এই প্রার্থী আরো বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি পবিত্র জায়গায় শিক্ষকরা বিবেকহীনভাবে নির্লজ্জের মতো সরকারের নির্দেশে ছাত্রলীগের হয়ে কাজ করছে। কুয়েত মৈত্রী হলে বস্তা বস্তা জাল ভাট তার প্রমাণ। প্রত্যেক হলে এভাবে জাল ভোট তৈরি করে রাখা হয়েছে।’
এই ভিপি প্রার্থী আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগ অনেক অছাত্রকে দিয়ে কৃত্রিমভাবে লাইন তৈরি করে সাধারণ ছাত্রদের ভোটদানে বাধা দিচ্ছে। সাধারণ ছাত্ররা এলে তাদের লাইনে দাঁড়াতে দিচ্ছে না।’
আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি হলে একযোগে ভোট শুরু হলেও রোকেয়া হল ও কুয়েত মৈত্রী হলে ভোট শুরু করা যায়নি। এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর রোকেয়া হলে ভোট শুরু হয় আর কুয়েত মৈত্রী হলের ভোট গ্রহণ শুরু হয় বেলা সোয়া ১১টায়।
পরে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা হলের একটি কক্ষ থেকে এক বস্তা আগে থেকে সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছেন। শিক্ষার্থীদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত হন প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁদর বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। একপর্যায়ে প্রোভিসি মুহাম্মদ সামাদ সেখানে যান। শিক্ষার্থীরা তখন তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পরে সকাল ১০টার দিকে কুয়েত মৈত্রী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যালটে ভোট দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই এই হলের প্রভোস্ট ড. শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রভোস্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ড. মাহবুবা নাসরিনকে।’
নির্বাচনে মোট ভোটার ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। আর ডাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে মোট ২২৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিটি হলে নির্বাচিত হবেন ১৩ জন করে। সেই হিসাবে ১৮ হল সংসদে প্রার্থী রয়েছেন মোট ৫০৯ জন।
এবারের ডাকসুতে প্যানেল দিয়ে নির্বাচন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাম সংগঠনগুলোর জোট, কোটা আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ-বিসিএল, ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মুক্তিজোট, জাতীয় ছাত্রসমাজ ও বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন।
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২১ জন; তাঁদের সঙ্গে এই নির্বাচনে ১৪ জন লড়বেন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং ১৩ জন সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে। ১২টি প্যানেলের বাইরে ভিপি পদে নয়জন এবং জিএস পদে দুজন স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন।