মধ্যরাতে ফের আন্দোলনে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা
বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন, নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন এবং মধুর ক্যান্টিন ও টিএসসিতে হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগের গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, উপদপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, স্কুল ছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক সৈয়দ আরাফাত, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
এর আগে গত ১৩ মে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার দিন থেকেই পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের নেতারা নানাভাবে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। মাঝে আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তাঁরা। কিন্তু আজ সোমবার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই তাঁরা আবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত অংশের একাধিক নেতা বলেন, কমিটি থেকে এখন পর্যন্ত ‘বিতর্কিত’দের বাদ দেওয়া হয়নি। বর্তমান কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, বিবাহিত, ব্যবসায়ী, অছাত্র, জামায়াত-বিএনপির ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্তরাও পদ পেয়েছে। এমন বিতর্কিতদের নিয়ে সোমবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধারই বহিঃপ্রকাশ।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের গত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, '৩২-এ (ধানমণ্ডি ৩২) তো রাজাকারের সন্তান ও বিতর্কিতদের নিয়ে ফুল দেওয়ার কথা না। যারা ছাত্রলীগ করেছে, তাদের নিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা। এটা একটা ষড়যন্ত্র।'
রাকিব বলেন, ‘আমরা এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য এখানে বসেছি। আমাদের দাবি হলো, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। আমাদের বোনদের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি প্রহসনমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এতে যে বিচার পেয়েছি, তাও প্রহসনমূলক। আমরা এ বিচার আগেই প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা চাই, একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি ও সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন।’
সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা আরো বলেন, ‘বিতর্কিতদের বিষয়ে আমরা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা গণমাধ্যমে বলেছে, আমরা নাকি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। আমাদের তো যোগাযোগ করার কথা ছিল না। যোগাযোগ করার কথা ছিল তাদের, কারণ তারা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।’
রাকিব আরো বলেন, ‘চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কমিটি দেওয়া হয়েছে বলা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য যারা মাঠে-ময়দানে ঘাম ঝরিয়েছে, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত লাভের জন্য, যারা তাদের গাড়ি দিয়েছে, সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, তাদের পদায়ন করা হয়েছে।’ এ সময় তিনি দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলেও জানান।